ঝিনাইদহের মেয়ে ফারজানা ইয়াসমিন সুপ্রিম কোর্টে নারী সহকারী রেজিস্ট্রার

প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭

ঝিনাইদহের মেয়ে ফারজানা ইয়াসমিন সুপ্রিম কোর্টে নারী সহকারী রেজিস্ট্রার
ফারজানা ইয়াসমিন
ফারজানা ইয়াসমিন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে প্রথমবারের সহকারী রেজিস্ট্রার নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি কথায় কথায় বলেন, নারী বিচারক হিসেবে বাংলাদেশ বিচার বিভাগে কোনো প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হইনি
ঝিনাইদহের মেয়ে ফারজানা ইয়াসমিন। মুক্তিযোদ্ধা বাবার তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। ১৯৯৯ সালের কথা,  তখন এস.এস.সি পরীক্ষায়, ঝিনাইদহ হতে যশোর বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৪র্থ স্থান করে নিজের স্বপ্নের মাত্রাটি দ্বিগুণ করে ফেলেন। তার আর  পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে, ২০০১ সালে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় ঝিনাইদহ সিটি কলেজ থেকে ০৭ বোর্ডে সর্বোচ্চ নম্বরসহ যশোর বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১ম স্থানটি নিজের করেন নেন ফারজানা। নিজের স্বপ্নে সঙ্গে মিল রেখে ভর্তি হন দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
প্রতিষ্ঠানটি থেকে ২০০৫ সালে এল.এল.বি অনার্স এবং ২০০৬ সালে এলএলএম পাস করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি মেধাবী এই নারী নিজের অর্জনের ঝুড়িতে লুফে নেন বেশ কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড। এর মধ্যে ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল ওম্যান জুডিজ ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০-২০১৩ (ইন্টারন্যাশনাল ওম্যান জুডিজ অ্যাসোসিয়েশন ইন পার্টনার শিপ উইথ গোল্ডেন গেট ইউনিভার্সিটি স্কুল অব ল) প্রাপ্ত হন। এই ফেলোশিপের  অংশ হিসেবে তিনি ২০১৩ সালে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ডেন গেট বিশ্ববিদ্যালয় হতে পরিবেশ আইন নিয়ে স্নাতকোত্তর করার সুযোগ পান। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম এই পুরস্কারটি অর্জন করেন। পুরস্কারের ঝুড়িতে আছে আরো অর্জন।
পড়াশোনায় ভালো ভালো ফলাফলের জন্য নিজের বাড়িকে বানিয়েছে পুরস্কারের জাদুঘর। পড়াশোনা শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে সহকারী জজ হিসাবে ঢাকা জজ কোর্টে যোগদান করেন। এর পর ২০১২ সালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ময়মনসিংহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসেন।
সবশেষ তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে প্রথমবারের সহকারী রেজিস্ট্রার নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি কথায় কথায় বলেন, নারী বিচারক হিসেবে বাংলাদেশ বিচার বিভাগে কোনো প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হইনি। আর তাছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা নারী বিচারকদের সবসময়ই যথাযথ মূল্যায়ন করেছেন এবং তারই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে এই প্রথম নারী সহকারী রেজিস্ট্রার নিয়োগ পেয়েছি আমরা। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে সর্বতো ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি। বর্তমান সময়ে বিচার প্রার্থীদের একটি বড় অংশ হচ্ছে নারী ও শিশু । তাছাড়া তাদের কাছে নারী বিচারকের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশের জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন মেধাবী বিচারক হিসেবে গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ জনগণের কাছেও মেধাই প্রাধান্য পাচ্ছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ