ঢাকা ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০১৮
কাজী মৃদুল,
কোটচাঁদপুর ঝিনাইদহঃ
সংবাদ শিরোনাম হলেন সাংবাদিক মিঠু শিকদার। দু’দিন আগেও যে ব্যক্তি দাপিয়ে বেড়িয়েছেন রিপোর্ট সংগ্রহে। তার চলে যাওয়াটা ছিল অনেকটায় নিঃশব্দে। এটা তার বন্ধু ও সহকর্মি হিসাবে আমি মেনে নিতে পারছি না। পৃথিবীতে জন্ম নিলে মরতে হবে এটাই বিধাতার নিয়ম। আর এটা হয়ে আসছে অনন্তকাল ধরে। তারপরও যেন প্রিয় বন্ধু’র হঠাৎ চলে যাওয়াটা আমাকে মানষিক ভাবে দূর্বল করে ফেলেছে। মিঠু শিকদারের মৃতদেহ দেখে এমনি ভেঙ্গে পড়তে দেখেছি গ্রামের কাগজ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিনসহ তার অনেক সহকর্মিকে। বন্ধু মিঠু শিকদারকে যে ভাবে দেখেছি , স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে বার বার চোঁখ মুছতে হচ্ছে। কম্পিউটারের কীবোর্ডের উপর কিসের টানে জানো বার বার হাত থেমে যাচ্ছে এগোতে পারছিনা।
মিঠু শিকদার আমার সমবয়সী বন্ধু। সংবাদপত্র জগতে আমার অনেক পরে তার পদ চারণা। বিশেষ করে সংবাদপত্রে আসার পর সে সময় প্রায় প্রতিটি দিন বিকালে কোটচাঁদপুরে আমার অফিসে আসতো সে। আড্ডা হত, আর আড্ডার ফাকে ফাকে রিপোর্টটি কিভাবে করলে ভাল হয় দেখিয়ে নিত। তার জানার আগ্রহটা ছিল প্রবল। একবার ধরিয়ে দিলে খুব সহজে লুফে নিত। এ ভাবে রিপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে নিজের আয়াত্তে নিয়ে নিজেই ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে গ্রামের কাগজের সাংবাদিকতা করেছেন দাপটের সাথে। তার সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক ২৭ বছরের।
তার বাসায় এক টেবিলে দুপুরের খাবার খেয়েছি বহুবার। এ ছাড়া যশোহর বা ঝিনাইদহ গেলে ফেরার পথে কালিগঞ্জে বাসষ্ট্যান্ডে নেমে মিঠু শিকদার, টিপু সুলতার, জামির হোসেন, হাবিব ওসমান, জাকির হোসেন, নয়ন খন্দোকারসহ বেশ কয়েক জন সাংবাদিক এক সাথে কালিগঞ্জে’র ষ্ট্যান্ডে’র একটি রেস্তরায় বসে ঘণ্টাকে ঘণ্টা আড্ডায় কাটিয়েছি কত তা দিন গুনে বলতে পারবো না। অনেক সময় রাত ১০টা থেকে ১১টা বেজে গেছে মিঠু শিকদারের পিড়াপিড়িতে।
ওই রাতে কোটচাঁদপুর আসার ব্যবস্থা করে দিয়েছে সে বহুবার। কালিগঞ্জে’র কোন কাজ বেঁধে গেলে তার কাছে মোবাইল করলেই সাথে সাথে সমাধান। সাংবাদিকদের সমস্যা তার কানে গেলে ব্যস্ততা বেড়ে যেত তার সবার থেকে বহু গুন। সব থেকে বড় গুন ছিলো তার কারুর প্রতি রাগ হলে বেশী ক্ষুণ মনে রাখতে পারতো না সে।
সব সময় ছোট বড় সমবয়সীদের সাথে হাসি মুখে কথা বলতো। আর যেখানে যতটুকু সময় থাকতো সে তার যাদুকরী কথাবার্তায় সে সময় টুকু মাতিয়ে রাখতো। বড় মনের মানুষ ছিল সে। কালিগঞ্জ গেলে তার সাথে আড্ডা বাদে কখনো এসেছি বলে আমার মনে পড়ে না। কোটচাঁদপুর আসলে আগেই মিঠু শিকাদার ফোন দিয়ে বলতো দোস্ত তুই তোর অফিস থেকে নড়বি না আমি আসছি। সাথে চা-নাস্তার ব্যবস্থা করে রাখ। আমি লক্ষ্য করেছি আমার উপর তার খবরদারিটা একটু অন্য রকম ছিল। সে মনে কষ্ট পুষে রাখতে পারতো না। যদি কখনো মন খারাপ লেগেছে হয় কোটচাঁদপুর চলে আসবে না হয় আমার কাছে ফোন। প্রতিটা রাতে ফেসবুকে আমার সাথে দুষ্টুমি একটা রুটিন কাজ ছিল তার। যদি কখনো আমার নেট বন্ধ থাকে ফোন করে নেট অন করতে বলতো। এটা আজ খুব বেশী মনে পড়ছে। মিঠু চলে যাওয়ার পর থেকে ফেসবুকে বসতে পারিনি। বন্ধু মিঠু বিহীন বিশাল শূন্যতা যেন কুরে কুরে খাচ্ছে আজ অবধী। যে মিঠু সিকদারের পাঠানো রিপোর্ট গ্রামের কাগজে ছাপা হত।
সেই গ্রামের কাগজে আজ (মঙ্গলবার) তার মৃত্যুর শিরোনাম। এটা ওই পত্রিকাসহ তার ঘনিষ্ট সহকর্মিদের জন্য বেদনাদায়ক তো বটেই। যেটা আজ বার বার অনুভব করছি। সব শেষে বলি বন্ধু মিঠু শিকাদার তোমাকে হারিয়ে আমরা শোকাহত। জানি তুমি আর আসবেনা ফিরে। ডাকবেনা আর কাউকে কোনদিন ! তুমি যেখানেই থাকো ভাল থেকো বন্ধু আমার।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com