ঢাকা ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:১২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
গ্রামে একটা কথা প্রচলিত আছে, “গরু হারালে মা এমনই হয়।” গরু হারিয়ে ভদ্রলোকের মাথা এতোটাই খারাপ হয়েছে, শেষে কলসের ভিতর সেই গরু খুঁজছে। স্ত্রী এই পাগালামীর কারণ জানতে চাইলে, তাকে বলছে আবার মা।
আমাদের দেশের ১৪ গুষ্ঠির মাথা খারাপ হ’তে যে বেশি বাকি নেই, তাই বুঝলাম অষ্টম শ্রেণীর গার্হস্থ্যবিজ্ঞান বইয়ের বৃত্তান্ত শুনে। এ যেন সেই কলসের ভিতরেই গরু খোঁজা। বইটা আবার ‘ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ‘ কতৃক প্রণীত।
আসল কথায় আসি। ঐ বইয়ের ৬৫ পৃষ্ঠায় মেয়েদের যৌন হয়রানি থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হিসেবে, কিছু উপদেশ/নির্দেশ জারী করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞবৃন্দ।
উপদেশগুলো-একা বাড়িতে না থাকা, কোন পুরুষ মানুষের সঙ্গেই একা বাইরে না যাওয়া। মানে দাঁড়ায়, সঙ্গে আরো অন্য মেয়েদের নিতে হবে! এরপর হাসবো না কাঁদবো ভেবে পাচ্ছিনে। আবার বখাটেদের সঙ্গে কী আচরণ করতে হবে, সে বিষয়ে হাস্যকর এবং অত্যন্ত অপমানজনক বক্তৃতা দিয়েছেন পণ্ডিতবর্গ। উল্লেখ করা দরকার, এই বইটি রচনা করেছেন ছয়জন নারী। সম্পাদনা করেছেন সেও দুইজন নারী।
নারী শুনে আমাদের বিচলিত হওয়ার বা বাড়তি নিন্দা করার কিছু নেই। কারণ সমাজে মানুষ থাকে দুই শ্রেণীর। পিছিয়ে পড়া এবং এগিয়ে থাকা। উভয় দিকেই নারী পুরুষ মিলিয়েই থাকে। এ আলোচনাও এখন আমাদের দেশে হরহামেশায় হচ্ছে, আমাদের ডাইনে বায়ে এবং মাথার উপরে বহুদিন যাবত বটবৃক্ষের ছায়া নিয়ে নারীরাই আছেন বহাল তবিয়তে, কিন্তু তারপরেও আমরা দিব্যি দেখছি, নারী নির্যাতন আজ মহামারী রূপ ধারণ করে আমাদের রীতিমতো গিলতে বসেছে। সেই হিসেবে কোথায় নারী বসে আছে, সে কথা আজ আর আমাদের কোন কাজে লাগবে না।
যাই হোক আসি আসল কথায়। আসেন আমরা নতুন ক’রে দিক্ষা নিই, সন্তানদের রক্ষনাবেক্ষন করবো কী ভাবে! উপদেশ গুলো শুনে মনে হয়েছে, যেন আমাদের কোন দেশ এবং সমাজ নেই! আমরা ভবঘুরে বাসিন্দা! কেবলি ভেসে চলেছি কচুরি পানার মতো, ে ঘাট থেকে সে ঘাটে!
হ্যাঁ,বিজ্ঞজনেরা অনেক ভেবে, বিস্তর গবেষণা ক’রে অবশেষে এই মত্ দিয়েছেন, যার নাম কিনা বাড়ি-সেখানেও একা থাকা যাবেনা! রাস্তায় বেরোতে হবে নারীরা দল বেঁধে। কিন্তু এই যে দলবদ্ধ নারীর মধ্যেও ধর্ষন হয়! তার উত্তর কী?
কিছুদিন আগে শিশু শ্রেণীর বইয়ে দেখলাম, ছাগল গাছে উঠে আম খাচ্ছে!
গল্পে পড়েছিলাম, এক মেয়ে বই পড়ে রান্না শিখেছিলো। তরকারীর বেলায় লেখা ছিলো কিছুটা লবন ফেলিয়া দিন। তো, ঐ মেয়ে শিখেছিলো লবন বাইরে ফেলতে হবে। সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানটুকুও না থাকলে যা হয়, এও তাই। এই বই লেখকরাও ঐ মেয়ের থেকে কোন অংশে কম যায় না, তা বোঝার জন্য আমাদের মনে হয় বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই।
সমস্ত দিক থেকে কতখানি দেউলিয়া হ’লে পরে, এ রকম একটা বই ক্লাসের পাঠ্য হিসেবে দেওয়া যায়, তা ভাবা যাচ্ছে না।
বিষয়টা এরকম- লোকালয়ে বাঘ ঢুকেছে,বাঘ চ’রে ব’রে খেয়ে বেড়াক! মানুষ সব ঘরে ঢোকো। মানুষের জীবন নিয়ে যে রসিকতার চুড়ান্ত জায়গায় চলে এসেছি আমরা, এতে কোন সন্দেহ নেই।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com