কৃষকদের অন্যরকম বনভোজন

প্রকাশিত: ৫:৫১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০১৮

কৃষকদের অন্যরকম বনভোজন

আয়োজকরা জানান, তাদের গ্রামের মাত্র দুইটি গ্রাম পরেই দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ অর্থাৎ এদেশের জাতীয় সম্পদ ঐতিহাসিক সুইতলা মল্লিকপুরের বটবৃক্ষ। এখানে অতীতে অন্য এলাকা থেকে বনভোজনে আসতেন দুর-দুরান্তের দর্শনার্থীরা। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরও এখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সরকারী ভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তারপরও অতীতের মানুষের সাথে মিল রেখে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ বৃক্ষের ছায়ার নিচেই তাদের বনভোজন হবে।

শনিবার সকাল ৯ টায় শুরু হয় তাদের গ্রাম থেকে ৫০ জনের বহর নিয়ে বনভোজনের উদ্দেশ্যে যাত্রা। বাহন হচ্ছে একটি পালকি ও ছই করে সাজানো ৬ টি গরুর গাড়ি। সকলের মধ্যে রয়েছে অতীতের গ্রামীণ জীবনের সাজ। কাঁধে গামছা, পরনে লুঙ্গি পায়ে স্যান্ডেল। কেউ কেউ মাথায় দিয়েছেন কৃষকদের মাথার টোপর বা মাথাল। বটবৃক্ষের তলে বেলা ১০ টায় পৌঁছানোর পর শুরু হয় নানা খেলাধুলা। গ্রামীণ সমাজ থেকে প্রায় হারিয়ে যাওয়া বউচি, কানামাছি, কুতকুত, ডাঙ্গুলী, কাচের বল বা মার্বেল। যারা খেলায় অংশ নিচ্ছেন না তারা ছায়ায় গোল করে বসে এক মুরব্বী কৃষকের মুখের অতীতের নানা গল্প শুনে মজা করছেন।

এ সব কিছুর পরে খাওয়া দাওয়া হলো খিচুড়ি, ডিম ভাজি সাথে দেয়া হয়েছে কাঁচা মরিচ ও পেয়াজ। খাবার পরিবেশন করা হলো কলা পাতায়। প্রত্যেকের হাতে ছিল মাটির তৈরি পানির গ্যাস।

কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইউব হোসেন জানান, ‘আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে না পারলে আমাদের নিজস্বতা হারিয়ে ফেলবো। অতীতের তুলনায় মানব সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে। দেশও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে অতীত ও বর্তমানের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তার অর্থ এই নয় যে আমরা আমাদের অতীত ভুলে যাবো। যারা নতুন প্রজন্মের মাঝে আমাদের অতীতের গ্রামীণ সংস্কৃতি ও কৃষকদের জীবনযাত্রার দিকগুলো তুলে ধরেছেন তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই’।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ