ঝিনাইদহে আঙ্গুল বিহীন পরিবারের সন্ধান

প্রকাশিত: ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৭

ঝিনাইদহে আঙ্গুল বিহীন পরিবারের সন্ধান

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়া এলাকায় আঙ্গুল বিহীন পরিবারের সন্ধান মিলেছে। ওই পরিবারের দুই সন্তান ও গৃহকর্তার কোন আঙ্গুল নেই। জন্মের পর থেকেই হাত ও পায়ে আঙ্গুলল ছিল না গৃহকর্তা খোয়াজ উদ্দীনের। তার পিতা ও দাদারও আঙ্গুল ছিল না।

 

বংশপরস্পরার অমোঘ নিয়মে তাই খোয়াজ উদ্দীনের মেয়ে সাবিনা খাতুন ও ছেলে মাসুদ হোসেন মুছার হাত পায়েও আঙ্গুলনেই। আঙ্গুলবিহীন অবস্থায় মেয়ে সাবিনা পড়ছেন কলেজে। আর ছেলে মাসুদ হোসেন মুছা পিতার দরিদ্র সংসারে হাল ধরতে কাজ করেন কালীগঞ্জ শহরের ফারুক লাইব্রেরীতে। হাতে পায়ে আঙ্গুলনা থাকায় খোয়াজ উদ্দীনকেও মানুষ কাজে ডাকে না। ফলে পরিবারটি আঙ্গুল বিহীন অবস্থায় সরকারী বস্তিতে অতিকষ্টে দিন যাপন করছেন।

 

সরেজমিন দেখা গেছে কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়ার ঘিঞ্জি পল্লীতে আঙ্গুলবিহীন পরিবারটির বসবাস। মাথা গোজার জন্য নিজস্ব কোন জমি নেই। সরকারী খাস জমিতে বিদ্যুৎ বিহীন পরিবেশে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন খোয়াজ উদ্দীন। দারিদ্রতার সব চিহ্ন লেগে আছে দিন মজুর খোয়াজ উদ্দীনের বাড়িতে। মেয়ে ও নিজের প্রতিবন্ধি ভাতার টাকায় সংসার চলে খোয়াজের। আর পরের বাড়িতে ঝি এর কাজ করেন স্ত্রী রিজিয়া।

 

কলেজ ছাত্রী সাবিনা খাতুন কিছুটা অভিমানের সুরে জানালেন এ যাবত বহু ছবি দিয়েছি। কেউ একটি চাকরী দেয় না। প্রতিবন্ধি খোয়াজের স্ত্রী রিজিয়া খাতুন জানান, প্রতিবন্ধি ভাতায় তাদের আর সংসার চলে না। তার ছেলে বা মেয়ের একটি সরকারী চাকরী হলে আমরা বেঁচে যেতাম। রিজিয়া জানালেন তার শ্বশুরসহ উর্ধ্বতন সব পুর্ব পুরুষের হাত পায়ে কোন আঙ্গুলছিল না। সেই থেকে অভিশপ্ত জীবন বয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারটি।

কালীগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুক্তার হোসেন জানান, পরিবারটি খুবই হতদরিদ্র। তাদের জন্য রাষ্ট্রের কিছু একটা করা উচিৎ।

 

কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, আঙ্গুল বিহীন পরিবারের দুই সদস্যকে আমরা প্রতিবন্ধি ভাতা দিচ্ছি। তাছাড়া মেয়ে সাবিনা ও ছেলে মুছাও স্কুল জীবন থেকে স্কুলবৃত্তি পেয়ে আসছিলো। ছেলেকেও আমরা প্রতিবন্ধি ভাতা দেবার ব্যবস্থা করছি।

 

পরিবারটিকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারেন যে কেউ। তাদের যোগাযোগ করতে পারেন ০১৮৫২-৮৮৯৯০৩ নম্বরে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ