ইবি সাংবাদিককে মারধর, ছাত্রলীগকর্মী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি

প্রকাশিত: ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৫, ২০১৭

ইবি সাংবাদিককে মারধর, ছাত্রলীগকর্মী বহিষ্কার, ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি

 

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার প্রতিনিধি শাহ আলমকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার ঘটনায় এক ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিস্কার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজারে তাকে এ লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। তবে এঘটনার সাথে জড়িতদের বিশ^বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিস্কারের দাবি জানিয়েছে বিশ^বিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, শাহ আলম ব্যক্তিগত কাজে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেখপাড়া বাজারে যায়। সেখানে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা দুইজন ছাত্রলীগ কর্মী পিছন দিক থেকে অতর্কিত হামলা করে বেধড়ক মারধোর করে। পরে খবর পেয়ে সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং তাকে উদ্ধার করে বিশ^বিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করেন।

মেডিকেল সেন্টারের কর্মরত ডাক্তার বদিউজ্জামান জানান, ‘তার মাথা এবং নাকে ব্যাপক ইনজুরি হয়েছে। ফলে কফের সাথে রক্ত পড়ছে।’

বিষয়টি সমাধানের জন্য ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন এবং সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের সাথে দেখা করতে টিএসসিসিতে অবস্থিত বিশ^বিদ্যালয় প্রেস কর্ণারে যায়। এসময় ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি নিয়ে দু:খ প্রকাশ করে এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চায়। পরে তারা ওই ঘটনায় জড়িত থাকায় ছাত্রলীগ কর্মী মিঠু কবিরকে সাময়িক বহিষ্কার করে। তবে ঘটনার সাথে জড়িত মাজেদুল হক রুবেলকে নিজেদের কর্মী বলে অস্বীকার করে। কিন্তু জানা যায় সে লালন শাহ হল ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। শাহ আলম বিশ^বিদ্যালয়ের প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ এবং দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

শাহ আলম বিশ^বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে ¯œাতোকত্তর শেষ করেছেন। ইন্টার্ণির রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য তিনি গত কয়েকদিন আগে ক্যাম্পাসে আসেন এবং চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নেওয়ার কথা রয়েছে। ক্যাম্পাস জীবনের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে এরকম ঘটনায় সম্মুখীন হওয়ায় ওই সাংবাদিক মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙে পড়েছে। তিনি এঘটনায় জড়িতদের কঠোর এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান।

এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রাজ বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আবেদন জানাই।’

বিশ^বিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাদের বিশ^বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিস্কারের মাধ্যমে প্রশাসন ফ্রিডম সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করবে বলেও আশা করছি।’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা খুবই মর্মান্তিক ও হতাশাজনক । আমি এই ঘটনার কারনে খুবই দুখ: প্রকাশ করছি। যারা আইন নিজের হাতে তুলে নিবে তাদের বিরুদ্ধে যাথাযথ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ