লাগামহীন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ!

প্রকাশিত: ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২২, ২০১৭

লাগামহীন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ!

মনিরুজ্জামান সুমন: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানা পুলিশের  বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, মানুষ হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। থানায় নতুন ওসি যোগদানের পর থেকে কর্মরত এসআই ও এএসআইরা নিরীহ মানুষকে ধরে এনে অর্থ বানিজ্যে লিপ্ত রয়েছেন। এসব কর্মকান্ডের মধ্যে বেশ কয়েকজন এসআই ও এএসআই জড়িত রয়েছেন বলে জানাগেছে।

এদের মধ্যে এক এসআই শহরের আড়পাড়ার একটি বাড়িতে যেয়ে নিয়মিত ফেন্সিডিল সেবন করেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। এসব কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষ পুলিশের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে।

শুধু তাই নয়, প্রতিদিন শহর ও গ্রামাঞ্চল থেকে বিভিন্ন কারনে ও টুনকো অভিযোগে সাধারণ মানুষকে ধরে এনে ব্যাপক অর্থ বানিজ্য করা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন। অনেক এসআই আছেন যারা অবৈধ মালামাল ও আসামি ধরে রাস্তায় চুক্তি করে সেখান থেকে ছেড়ে দেন। এসব এসআই’র মধ্যে একজন আছেন যিনি আসামি ধরে গোপন স্থানে ১/২ দিন রেখে দিয়ে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের নারায়নে তুষ্ট হয়ে তাদের ছেড়ে দেন বলে সূত্র জানায়।

একাধিক ব্যক্তি জানান, বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আসামি ধরে পুলিশ থানা হাজতে রেখে দেয়। গভীর রাতে তাদের সাথে চুক্তি করে অনেককে ছেড়ে দেন। আর যারা ইয়াবা, ফেন্সিডিল বা অন্য কোন মাদকসহ আটক হয় তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মাদকদ্রব্য আইনে চালান না দিয়ে ৩৪ অথবা ৫৪ ধারায় আদালতে চালান দেন। এসব কর্মকান্ডের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছেন থানার এসআই কওসার আলম। তিনি থানায় যোগদানের পর থেকে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন অভিযোগে আসামি ধরে ব্যাপক অর্থ বানিজ্য করছেন। অভিযোগ রয়েছে গত ১৯ আগস্ট দক্ষিনাঞ্চলের জালিয়াত চক্রের প্রধান হোতা হামিদুজ্জামান ওরফে কথিত জলিল হুজুরকে গ্রেফতার করেন তিনি। গ্রেফতারের পর কোন অভিযোগে এবং কোথা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা সাংবাদিকদের কাছে নির্দিষ্ট করে বলতে চাননি। রাতে ওই জালিয়াত চক্রের প্রধান হোতার সাথে মোটা অংকের দেন দরবার চালিয়ে পরদিন তাকে ৫৪ ধারায় আদালতে চালান করেন।

এছাড়া ইয়াবা, ফেন্সিডিল উদ্ধার এবং আসামি আটক করলেও তিনি সুষ্পষ্টভাবে সাংবাদিকদের কিছু বলতে চান না। পরে জানাবো বলে ফোন রেখে দেন।

নাম প্রকাশে একাধিক ব্যক্তি জানান, বেশ কিছু দিন আগে শহরের আড়পাড়া থেকে আশাদুল ওরফে লিডার নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে তার কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নেন। এছাড়া কাশিপুরের মিজান ও সেলিম নামের দুই যুবককে আটক করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ আদায় করেন। একই এলাকার ফকির বিটি নামে খ্যাত তার ছেলেকে আটক করে ৮ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গত ১৯ আগস্ট সুন্দরপুর থেকে চাঁদবা গ্রামের এরাদ আলীর ছেলে নান্নু কে বিনা কারনে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়ে ৩৪ ধারায় আদালতে চালান দিয়েছেন। প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে রঘুনাথপুরের লিমন নামের এক যুবককে আটক করে দারোগা কাওসার। আটকের পর তাকে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইয়াবা (বাবা) সহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকেও ৩৪ ধারায় চালান দেয়া হয়। তাহলে তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ইয়াবা (বাবা) গেল কোথায়? এ প্রশ্ন সাধারণ মানুষের। এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে দারোগা কাওসারের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের ব্যাপারে দারোগা কওসারের কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ