বিতর্কিত মন্ত্রী এমপিরা মনোনয়ন পাবেন না

প্রকাশিত: ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৮

বিতর্কিত মন্ত্রী এমপিরা মনোনয়ন পাবেন না

শাহেদ চৌধুরী

samakal

আওয়ামী লীগের অজনপ্রিয় মন্ত্রী ও এমপিরা আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাচ্ছেন না। অর্থাৎ এই মন্ত্রী ও এমপিরা আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত রোববার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে দলের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনপ্রিয়তার বিষয়টি জরিপ করা হচ্ছে। ওই জরিপের ভিত্তিতে জনপ্রিয় নেতারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক  নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইতিমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে নিবিড় জরিপ কার্যক্রম চালানো হয়েছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আর জরিপের ভিত্তিতেই আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাই করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এ কার্যক্রম দেখভাল করছেন।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা জরিপ কার্যক্রমের প্রসঙ্গ তুলে ধরে গত রোববারের বৈঠকে স্পষ্ট বলেছেন, দলের অনেক এমপি বিগত নির্বাচনগুলোতে ধারাবাহিক জয় পেয়ে আগামী নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু জরিপ রিপোর্টে অজনপ্রিয় হলে ওই নেতা দলের মনোনয়ন পাবেন না। জনগণের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীই আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাবেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, ৫৬ জেলার বিভিন্ন আসনে দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মন্ত্রী ও এমপি ধারাবাহিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় পেয়ে আসছেন। কিন্তু বর্তমানে এই মন্ত্রী ও এমপিদের মধ্যে কারও কারও জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জরিপ রিপোর্টে এমন চিত্র পরিস্কার। তাদের মধ্যে বর্তমান মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যও রয়েছেন। এমনকি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতাও রয়েছেন এ তালিকায়।

আলোচিত জেলাগুলো হচ্ছে- পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর, মাগুরা, নড়াইল, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, টাংগাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।

এসব জেলার আসনগুলোতে দলীয় মনোনয়নের বেলায় ব্যাপক পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কয়েক নেতা জানিয়েছেন। তাদের দৃষ্টিতে, বর্তমান এমপিদের অনেকেই দলের মনোনয়নবঞ্চিত হবেন। আর দলীয় মনোনয়ন হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন মন্ত্রী ও দলের কার্যনির্বাহী সংসদের কয়েকজন নেতাসহ জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেতা। বর্তমানে এমপির দায়িত্ব পালন করলেও তাদের আসনে প্রার্থী বদল করবে আওয়ামী লীগ।

এমপি ও তার ছেলের কারণে  আওয়ামী লীগের পরাজয়

গত রোববারের বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলার সভাপতি আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, খুলনা জেলার সভাপতি শেখ হারুন অর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা, খুলনা মহানগরের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান।

প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর জেলা নেতাদের কাছে জানতে চান, গত ২৯ মার্চ গাজীপুর সদরের পিরুজালী, মির্জাপুর ও ভাওয়ালগড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তা থাকার পরও আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা কেন হারলেন? তিনি একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে দলের যোগ্য নেতা থাকার পরও ওই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণও জানতে চেয়েছেন।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, ওই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই রিপোর্টে দলীয় প্রার্থীদের পরাজয়ের জন্য গাজীপুর-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রহমত আলী ও তার ছেলে জামিল হাসান দুর্জয়ের নেতিবাচক ভূমিকাকে দায়ী করা হয়েছে। ওই নির্বাচনে জামিল হাসান দুর্জয় ও তার সমর্থকরা দলীয় প্রার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য ভোট চেয়েছিলেন। দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ভোটকেন্দ্র কমিটি, স্থানীয় নেতাকর্মীদের বক্তব্য ও ভিডিওচিত্রে এর সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

স্ত্রীর জন্য খালেকের তদবির

বাগেরহাট-৩ আসনের এমপি তালুকদার আবদুল খালেক খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র। কিন্তু তিনি এবার দলের মনোনয়ন চাননি। তবে দলীয়ভাবে তাকে মেয়র পদে আবারও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তালুকদার আবদুল খালেককে এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করেই মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। ফলে বাগেরহাট-৩ আসনে উপনির্বাচনের প্রয়োজন হবে। এ ক্ষেত্রে ওই উপনির্বাচনে তালুকদার আবদুল খালেক তার স্ত্রী বাগেরহাট-৩ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুন নাহারকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ করলে তাতে সম্মত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে প্রধানমন্ত্রী তাকে জানান, উপনির্বাচনে জয় পেলে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাবেন হাবিবুন নাহার। তখন আর তালুকদার আবদুল খালেক মনোনয়ন পাবেন না।

গত রোববারের বৈঠকে আওয়ামী লীগের পদস্থ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ওবায়দুল কাদের, রশিদুল আলম, মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

vulkan vegas, vulkan casino, vulkan vegas casino, vulkan vegas login, vulkan vegas deutschland, vulkan vegas bonus code, vulkan vegas promo code, vulkan vegas österreich, vulkan vegas erfahrung, vulkan vegas bonus code 50 freispiele, 1win, 1 win, 1win az, 1win giriş, 1win aviator, 1 win az, 1win azerbaycan, 1win yukle, pin up, pinup, pin up casino, pin-up, pinup az, pin-up casino giriş, pin-up casino, pin-up kazino, pin up azerbaycan, pin up az, mostbet, mostbet uz, mostbet skachat, mostbet apk, mostbet uz kirish, mostbet online, mostbet casino, mostbet o'ynash, mostbet uz online, most bet, mostbet, mostbet az, mostbet giriş, mostbet yukle, mostbet indir, mostbet aviator, mostbet casino, mostbet azerbaycan, mostbet yükle, mostbet qeydiyyat