‘গানে ভুবন ভরিয়ে দেবে ভেবেছিল একটি পাখি’

প্রকাশিত: ২:০০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৯

‘গানে ভুবন ভরিয়ে দেবে ভেবেছিল একটি পাখি’

দাউদ হোসেন,মহেশপুর-
দীর্ঘশ্বাস ফেলে দূর দিগন্তের দিকে পাথর চোখে তাকিয়ে থাকে লোকটা। যদিও জন্মান্ধচোখে কিছুই দেখেনা সে। অন্ধ শিল্পী তারিফ আহম্মেদ এর কথা বলছি। এখন আর নেই গানের ব্যস্ত সময়। সি,ডি ক্যাসেটের ব্যবসাও এখন নেই। অথচ একটা সময় বড় সপ্নময় ছিল গানের ভুবন। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এর আধুনিক এবং নজরুল সংগীতের নিয়মিত শিল্পী তারিফ আহম্মেদ এর জন্ম ১ জানুয়ারী ১৯৮৬ সালে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার নস্তি গ্রামের সম্ভান্ত এক মুসলিম পরিবারে। তার বাবার নাম আব্দুর রহমান এবং মায়ের নাম রশিদা বেগম। তিন ভাই ২ বোনের মধ্যে সে ৩য়। জন্মগতভাবে অন্ধ হওয়ায় তার আর লেখাপড়া করা হয়নি। রক্ষনশীল মুসলিম পরিবার হওয়ায় পরিবারের মধ্যে সাংস্কৃতিক মনা ছিল না। তার নানা ফরিদ উদ্দিন মন্ডল ছিল সাংস্কৃতিক মনা। ছোটবেলায় তাকে একতারা ও প্রেমজুড়ি কিনে দেয় খেলা করার জন্য। এ নিয়ে তারিফ খেলও করে গানও করে। সে থেকেই তার গান গাওয়া শুরু। যখন তার বয়স ১০-১১ বছর তখন সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয়ের অধীন গাজীপুর টুঙ্গি ইআরসিপিএইচ প্রশিক্ষন কেন্দ্রে সঙ্গীতের উপর ৬ মাস তালিম নেয় তারিফ। সেখান থেকে ১৯৯৭-৯৮ সালে যশোর কিংশুক ও সুরধ্বনী সঙ্গীত নিকেতনে বিশিষ্ট সঙ্গীতাজ্ঞ অধীন্দ্র প্রসাদ বন্দোপাধ্যায়ের নিকট সঙ্গীতের তালিম নেয়। এরপর বিভিন্ন স্টেজ শো করে তারিফের নাম ছড়িয়ে যায়। সাউন্ডটেক এর ব্যানারে ২০০৯ সালে বের হয় তার আধুনিক গানের এ্যালবাম ‘আমার চোখের আলো ফিরিয়ে দাও’, ¯্রােতা নন্দিতও হয়েছিল। এখন বড় দুঃসময়। অন্ধ মানুষটার বড় স্ব-করুণ উক্তি ‘আমিতো গান ছাড়া আর কিছুই জানিনা,এখন আমার কি হবে?’ তার উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয় গান হলো-বিধাতা আমার চোখের আলো ফিরিয়ে দাও, ঐ পাড়ার ঐ কালো মেয়ে চিঠি লিখেছে, হে মাবুদ হে মাওলা রে মাওলা রে ইত্যাদি। সে শিল্পী বান্ধব সরকারের কাছে সার্বিক সহায়তা চেয়েছেন। ‘গানে ভুবন ভরিয়ে দেবে ভেবেছিল একটি পাখি’ এই বিখ্যাত গান গাইতে গাইতে চোখ ভিজে যায় তারিফের। প্রতিদিন তারিফের মত কত তারা ঝরে যায়, আমরা কজনা তার খবর রাখি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ