ঢাকা ২৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৯শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:১৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০২২
মহেশপুর প্রতিনিধি-
সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত হাড় কাপানো শীত উপেক্ষা করে গ্রাম অঞ্চলের ঘরে ঘরে এখন চলছে শীত মৌসুমের অন্যতম মজাদার গ্রামীণ খাবার কুমরো বড়ি। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার প্রতিটি গ্রাামে গ্রামে কুমড়ো বড়ি তৈরির যেন মহোৎসব চলছে। শীতকে স্বাগত জানিয়ে গ্রামের কম বেশি প্রায় সব বাড়িতেই চলছে কুমড়ো ও ডালের বড়ি তৈরি। স্বাদে ও মান ভালো হওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে বড়ির চাহিদা। বাড়তি আয়ের পথ তৈরি হওয়ায় অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বড়ি তৈরি করছেন নারীরা।
মাষকলাই ভিজিয়ে সেই ডালের সঙ্গে পাকা চালকুমড়ো মিশিয়ে তৈরি করা হয় এ সুস্বাদু বড়ি। শীতের সময় গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ নারীরা বড়ি তৈরি করার কাজটি করে থাকেন। কুমড়ো বড়ি তরকারির একটি মুখরোচক খাদ্য।এতে তরকারির স্বাদে যোগ হয় নতুন মাত্রা।
জানা যায়, উপজেলার নারীরা এই বড়ি তৈরি করার জন্য বেশ কয়েক মাস আগে থেকে চাহিদা মতো পাকা চাল কুমড়োর ব্যবস্থা করে রাখেন। কুমড়ো বড়ি তৈরিতে মূলত চালকুমড়া এবং মাষকলাইয়ের ডাল প্রয়োজন হয়। মাষকলাইয়ের ডাল ছাড়া অন্য ডালেও তৈরি করা যায় এই বড়ি। মচমচে করে রোদে শুকাতে পারলে এই বড়ির ভালো স্বাদ পাওয়া যায়।
খালিশপুর গ্রামের রোজিনা খাতুন জানান, ৫ কেজি কুমড়ার সাথে দুই কেজি মাসকলাইয়ের মিশ্রণে কুমড়া বড়ি ভাল তৈরী হয়। আগে মাসকলাই পানিতে ভিজিয়ে পরিস্কার করা, আর ঢেকিতে বা পাটায় বেটে বড়ি তৈরী করতে প্রচুর পরিশ্রম হত, সেই সাথে অনেক সময় লাগতো। এখন খোসা ছাড়ানো মাসকলাই বাজারে ক্রয় করতে পাওয়া যায়। মাসকলাই পানিতে ভিজিয়ে মেশিনের সাহায্যে মাড়াই করে অল্প সময়ে বড়ি তৈরীর মিশ্রণ তৈরী করা খুব সহজ হয়েছে। এতে করে অল্প সময় প্রচুর পরিমাণ কুমড়া বড়ি তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে। এক কেজি কুমড়া বড়ি তৈরী করতে প্রায় ১৩০ টাকা মত খরচ হচ্ছে। আর বাজারে ২শ থেকে আড়াই’শ টাকা দরে কুমড়ার বড়ি বিক্রি হচ্ছে। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয় করা সম্ভব হচ্ছে।
উপজেলার কুমড়ো বড়ির ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, এখানকার কুমড়ো বড়ি খুব সুস্বাদু হওয়ায় এ অঞ্চলের বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বিশেষ করে ঢাকায় এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, শীত মৌসুমে গ্রামের নারীরা কুমড়ো বড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করছে। গ্রামীণ নারীরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও পৃষ্টপোষকতা পেলে তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
Design and developed by zahidit.com