মহেশপুরে কোটি টাকার সৌরবিদ্যুৎ সড়কে আছে কিন্তু বাতি জ্বলেনা

প্রকাশিত: ১১:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২২

মহেশপুরে কোটি টাকার সৌরবিদ্যুৎ সড়কে আছে কিন্তু বাতি জ্বলেনা

জিয়াউর রহমান জিয়া,মহেশপুর –

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কের পাশে কিবা রাস্তার মোড়ে মোড়ে স্থাপন করা হয় কোটি টাকা খরচের সৌর সড়ক বাতি। সেই সোলার প্যালেনের ৮০ শতাংশই এখন নষ্ট ও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অনেক জায়গায় সোলার লাইট স্থাপনের কয়েক মাসের মধ্যে তা দেখতে অনেকটা খেলনার লাইটের মত হয়ে গেছে।

কোথাও কোথাও সোলার আছে বাতি নেই,অনেক স্থানে ল্যামপোষ্ট ভেঙ্গে পড়েছে। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে এগুলো রক্ষনাবেক্ষন,সংস্কার বা দেখভালের কথা থাকলেও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করার কারনেই আজ এগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সড়ক গুলোতে নি¤œমানের সৌর প্যালেনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজন করে বেশির ভাগ অর্থই নিন্মমানের সোলার কোম্পানী হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ সৌর বাতিগুলো না জ্বলার কারণে অন্ধকারে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামীন জনপদের সাধারণ মানুষকে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানাগেছে, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীন অবকাটামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরসহ কয়েকটি অর্থ বছরে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্টিক সোলার ও হোম সোলার স্থাপন করেন। এ উপজেলায় আনুমানিক ৫০০টে স্টিক সোলার ও হোম সোলার স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ল্যাম্পপোষ্টের বরাদ্ধ ধরা হয়েছে আনুমানিক ৫৬ হাজার টাকা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থান,রাস্তা,মসজিদ,মন্দির,স্কুল,কলেজ ও প্রতিষ্ঠানের সামনে পথচারীদের সুবিধার্থে ২৫,৩০ও ৫০ ওয়ার্ডের এ স্টিক সোলার গুলো বসানো হয়।

মহেশপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌর সভায় এসব সোলার লাইটগুলো দেখভালের দায়িত্ব কার এমন প্রশ্ন স্থানীয় সাধারণ মানুষের। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে এই সোলার লাইট স্থাপন ও দেখভালের দায়িত্ব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার। কিন্তু মহেশপুর উপজেলায় এসব লাইট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাগিয়ে যাওয়ার পর আর সংস্কার করা হয়নি। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় মসজিদ,মন্দির,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাস্তাঘাট,হাট-বাজার ও জনগুরুত্বপূর্ন স্থানে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার সিস্টেম প্যালেন ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়। এদিকে সড়ক বাতিগুলো না জ্বলায় সরকারের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয়রা। সরকারের কোটি কোটি টাকা জলে গেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন।

সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌর এলাকার জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ন স্থানে বসানো ল্যাম্পপোষ্টের লাইটগুলোর অধিকাংশ যেন এক একটি খেলনার মত দাড়িয়ে রয়েছে,সেগুলো এখন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। সৌরবাতির খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে,বাতি আছে আলো নেই।

স্বরুপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন,তার ইউনিয়নের সোলার প্যানেলে গুরুত্বপূর্ন ল্যাম্পপোস্টগুলোর অধিকাংশ বন্ধ হয়ে আছে। লাগানোর কিছুদিন পড় থেকে আর লাইটগুলো জ্বলছে না। সরকারের এত টাকার সড়কবাতি ব্যবহারে কোন সুফল আসছে না।

এসবিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রম্যান আরিফান হাসান চৌধুরী নুথান জানান,আমার ইউনিয়নের কয়েকটি বাজারসহ গুরুত্বপূর্ন সড়কে বসানো সোলার লাইট বসানো আছে। কিন্তু তার অধিকাংশোই নষ্ট হয়ে গেছে,এখন আর জ্বলে না শুধু খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেরুন নেছা বলেন, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে সোলার লাইট গুলো হয়তো নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইউপি চেয়ারম্যানরা তাদের ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সোলার লাইটগুলো লাগিয়েছে এটা আমাদের দেখার বিষয় না।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক আজা জানান, কম দামের সোলার প্যানেল বসালে তো নষ্ট হবেই। দাম দিয়ে কিনলেতো নষ্ট হতো না। আজ শুধু পৌর এলাকা না মহেশপুরের অধিকাংশ সোলার প্যানেল গুলো আজ নষ্ট হয়ে পড়ে পরেছে। কে দেখবে বা কে মেরামত করবে আমরা তার কিছুই বলতে পারছিনা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ