ঢাকা ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৪৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০১৯
শামীম খান মহেশপুর(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধিঃ
জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী বিল্টু (৩৫), হাটতে না পাড়া বিল্টুর একমাত্র বাহন হুইল চেয়ার। আর সেই হুইল চেয়ারটিও নিজেই যেন প্রতিবন্ধী। চাকায় হাওয়া নেই, হাত পেটেলের চেইন স্পকটেক ভাঙ্গা,নেই ব্রেক তার পরও সেই হুইল চেয়ারে চরে চলাচল করেন প্রতিবন্ধী বিল্টু।
সংবাদ সংগ্রহের কাজে যাওয়ার সময় ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নাটিমা-মান্দারতলা সড়কে দেখা যায় রাস্তার পাশ দিয়ে হাত দিয়ে চাঁকা ঘুড়িয়ে কোন রকমে চলছে বিল্টুর হুইল চেয়ারটি।
কথা হয় প্রতিবন্ধী বিল্টু সাথে, সে জানায় যাদবপুর ইউনিয়নের জলুলী দাখিল মাদরাসা পাড়ার শফিকুল ইসলামে ছেলে সে। বাবা পরের জমিতে দিন মুজুরের কাজ করেন। মুজুরের কাজ করে যা পাই তা দিয়েই ৫ জনের সংসার টা কোন রকমের চলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। জন্ম থেকেই সে প্রতিবন্ধী দু-পায়েই কোন বল না থাকায় তার চলার একমাত্র বাহন এই হুইল চেয়ারটি। হামাগুরি দিয়ে আগে চলতে হতো তা দেখে এলাকাবাসী তাকে এটি কিনে দিয়েছিলো। এটা চালিয়ে বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুড়ে সাহায্য তুলতেন। এখন এটার অবস্থা বেশি ভালো না । এটা চলতে চায় না, হাতের পেটেলটিও করা যায় না। হাত দিয়ে চাঁকা ঘুড়িয়ে চলতে হয়,অনেক সময় লেগে যায় অল্প রাস্তা যেতে।
স্থানীয়রা বলেন, অনেক দিন ধরেই প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে হাত দিয়ে হুইল চেয়ারের চাঁকা ঘুড়িয়ে রাস্তায় চলতে দেখি। রোদ-গরমের মধ্যে দিয়ে ৫ মিনিটের রাস্তা তার এক ঘন্টা লেগে যায়। হাত দিয়ে চাঁকা ঘুড়িয়েই বা কতদূর যাওয়া যায়। গাড়িটির চাকা,রিং-বেয়া রিং সবই নষ্ট হয়ে গেছে। গাড়িটি ভালো থাকলে হয়তো তার এতো সময় লাগতো না। তারা আরও বলেন প্রতিবন্ধী ছেলেটির একটি নতুন গাড়ি একান্তই প্রযোজন।
যাদবপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মেম্বার হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় দেন-দরবার আর বিভিন্ন অফিসে ঘুরেও ছেলেটির জন্য একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিতে পারিনি। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ছেলেিেটকে একটি হুইল চেয়ার কিনে দেওয়া হয়েছে। আজ সেটিও চলাচলের মত আর নেই। নষ্ট হয়ে গেছে অনেক যন্ত্রাং। তিনি আরও বলেন যদি আপনাদের সহযোগীতার কারনে ছেলেটি যদি একটা হুইল চেয়ার পাই তাহলে সে চলা ফেরা করে বেড়াতে পারবে।
যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শাহীদুল ইসলাম জানান, ছেলেটা আসলেই খুবই অসহাই। সে জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। তাই রাস্থার চলার জন্য একটা ভালো হুইল চেয়ারের তার খুবই প্রয়োজন। আমাদের হাতে তো কোন হুইল চেয়ার থাকেনা যে আমি একটা চেয়ার তাকে দেবো। আমার হাতে চেয়ার থাকলে আমি সবার আগে তাকেই দিতাম। প্রতিবন্ধী বিল্টুই চেয়ার পাওয়ার উপযুক্ত ছেলে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাশ্বতী শীল জানান, আমি মহেশপুরে যোগদানের পর যে সব প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েরা এসেছে আমি কাউকেই খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়নি। আর প্রতিবন্ধী বিল্টু তো আমার অফিসে আসেইনি। আসলে আমি অবশ্বই তার জন্য একটা চেয়ারের ব্যবস্থা করবো।
Design and developed by zahidit.com