ঝিনাইদহ কে সি কলেজের ইতিহাস………….

প্রকাশিত: ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০১৭

ঝিনাইদহ কে সি কলেজের ইতিহাস………….

১৯৬০ সালের তৎকালীন ঝিনাইদহ মহকুমার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন ঝিনাইদহ শহরের বিশিষ্ট সমাজসেবক বাবু কেশব চন্দ্র পাল এই কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা পুরষ। তিনি কলেজটির মূলভবন (বর্তমান এটি অধ্যক্ষের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে) ও জমি দান করেন এবং তাঁর নামানুসারে কলেজটির নামকরণ করা হয়। ঝিনাইদহ মহকুমার তৎকালীন এসডিও জনাব এম.কে আনোয়ার (সিএসপি) এই কলেজটি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
সরকারী কে সি কলেজ ঝিনাইদহ জেলার অন্যতম প্রধান বিদ্যাপীঠ। ঝিনাইদহ জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ ঐতিহ্যবাহী কলেজটি ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তদানীন্তন মহকুমা প্রশাসক জনাব এম খুরশীদ আনোয়ার ও অন্যান্য সরকারী কর্মকর্তা এবং বিদ্যোৎসাহী জনগণের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও অর্থানুকুল্যে গড়ে ওঠে ঝিনাইদহবাসীর বহুদিনের কাংক্ষিত স্বপ্ন উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান কেশবচন্দ্র কলেজ।
কেশবচন্দ্র কলেজকে সংক্ষেপে ( কি. সি কলেজ বলা হয়) ।

১৯৬০ সালে জনাব শেখ হাবিবুর রহমান বাদ পুকুরিয়া মৌজায় ৩.৩০ একর জমি কলেজের জন্য দান করেন। বর্তমানে কলেজের মোট জমির পরিমান ৯.০২ একর। ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আই এ ও আই কম এবং ১৯৬৪ সালে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এইচ এস সি শ্রেণীর অ্যাফিলিয়েশন প্রদান করে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ১৯৬৩ সালে বি এ ও বি কম এবং ১৯৬৭ সালে বি এস সির অ্যাফিলিয়েশন প্রদান করায় পূর্নাংগ ডিগ্রী কলেজে পরিণত হয়।’

 

১৯৬০ সালের পূর্বে ঝিনাইদহে কোন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এখানে একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এই প্রয়োজনীয়তার বাস্তবরূপ দেন তৎকালীন ঝিনাইদহ মহকুমা প্রশাসক এম, কে আনোয়ার (পরবর্তী কেবিনেট সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী)। তাঁকে বিশেষ ভাবে সহায়তা করেন এ্যাডভোকেট মরহুম তোয়াজ উদ্দীন আহম্মদ, প্রাক্তন মন্ত্রী মরহুম মোঃ বশীর উদ্দীন মজুমদার, প্রাক্তন পৌরসভা চেয়ারম্যান মোঃ মতলুবুর রহমান, এ্যাডভোকেট মরহুম আবদুল গফুর, এ্যাডভোকেট শরৎ কুমার বিশ্বাস ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়।

 

 

১৯৬০ সালে প্রথম উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক এবং বাণিজ্য বিভাগের শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করা হয়। ১৯৬১ সালে কলেজটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে প্রথম অনুমোদন লাভ করে। ১৯৬২/৬৩ শিক্ষা বর্ষে কলেজটিতে বি, এ বি-কম এবং আই, এস,সি বিভাগ চালু করা হয়। ১৯৬৬ সালে বি, এস সি বিভাগ চালু করার পর কলেজটি একটি পরিপূর্ণ কলেজের মর্যাদা লাভ করে। পরবর্তীতে কলেজটি উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গের বিশেষ অবদান রয়েছে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ, প্রাক্তন এম, এল, এ মরহুম মোঃ মোবারক হোসেন ও প্রাক্তন ঝিনাইদহ মহকুমা প্রশাসকদ্বয় মোঃ ফয়েজ উল্লা, মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন, জেড এ সামছুল হক, মোঃ গোলাম সরোয়ার। এ ছাড়াও কলেজটি উন্নয়ণে কলেজের তৎকালীন অধ্যাপক বৃন্দের অবদানও বিশেষ স্মরণীয়।

 

 

কলেজটিতে অনেক খ্যাতনামা অধ্যক্ষগণ নিষ্ঠার সাথে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল আলম, সৈয়দ আঃ রাজ্জাক, আঃ মজিদ, সোহরাব উদ্দীন আহম্মদ, মোঃ আবদুল হান্নান, সরদার আমান উল্লাহ, সিরাজ উদ্দীন মৃধা, বাবু যুগোল কিশোর বিশ্বাস ও আবদুর রাজ্জাক।

 

 

ঝিনাইদহের এই ঐতিহ্যবাহী কলেজটিকে ১৯৮০ সালে সরকারী করণ করা হয়। এই নব সরকারীকরণকৃত কলেজটি স্বল্প সময়ের মধ্যে তাঁর বহু দিনের পুঞ্জিভূত সমস্যাকে কাটিয়ে উঠে ঝিনাইদহের উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে এক নব দিগন্তের সূচনা করেছে।

তথ্য: ইন্টানেট

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ