ঝিনাইদহের সাবেক এমপি ওহাবের দুর্নীতি মামলার রায় ৩০ অক্টোবর

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০১৭

ঝিনাইদহের সাবেক এমপি ওহাবের দুর্নীতি মামলার রায় ৩০ অক্টোবর

ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মো. আবদুল ওহাবের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার রায় ঘোষণার দিন পরিবর্তন করা হয়েছে। যশোর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা রায় ঘোষণার দিন আগামী ৩০ অক্টোবর নির্ধারণ করেছেন। যদিও বুধবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত ছিল।

প্রায় কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৮ সালে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের করে। যশোর বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বুধবার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু রায় প্রস্তুত হয়নি। এ জন্য বিচারক আগামী ৩০ অক্টোবর মামলার রায় ঘোষণার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, আসামি পক্ষ হাইকোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে। এরপর আদালত গত ২১ আগস্ট মামলার বিচার কাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয়। আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ী গত ৩ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়েছে। ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহ শহরের আদর্শ পাড়ার কবি সুকান্ত সড়কের মরহুম জরীপ বিশ্বাসের ছেলে ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মো. আবদুল ওহাব। তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ২৪ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর থানায় দুর্নীতির মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মো. ওয়াজেদ আলী গাজী। এই মামলায় ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, মো. আবদুল ওহাব তার সম্পদ বিবরণীতে ৮৩ লাখ ১২ হাজার ৩২৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা যাচাই করে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭৬ টাকার সম্পদ পেয়েছেন। আবদুল ওহাব নিজে, তার পুত্র, কন্যা ও স্ত্রীর নামে অসাধু উপায়ে ক্রয়সূত্রে অর্জিত ৯০ লাখ ৫১ হাজার ৪৫২ টাকা ৭০ পয়সা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উদ্দেশ্যেমূলকভাবে গোপন করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অপরদিকে তার বিরুদ্ধে নিজের নামে, মায়ের নামে, তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যার নামে এবং বেনামে ক্রয়সূত্রে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সর্বমোট ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকা ৩২ পয়সা টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুর্নীতি দমন কমিশন যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুদকের আইনে তথ্য গোপনের অপরাধে ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজা ও জরিমানার বিধান রয়েছে। একই সঙ্গে অবৈধ সম্পদ ক্রোকের বিধান রয়েছে। সেই হিসেবে দুদক আদালতে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, মো. আবদুল ওহাব ঝিনাইদহ-১ আসনের দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও শৈলকূপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ