শীর্ষ উদ্যোক্তা সিরিয়ায় নিহত হলে ‘আইব্যাক’ বন্ধ হয়ে যাবার পর খোলা হয় ‘আইসিংটেল’। ওই সিংটেলের বাংলাদেশ কার্যক্রম ছিল ‘ওয়াহমি টেকনোলজি’র নামে। প্রতিষ্ঠানটি সিংটেলের পাঠানো টাকা দিয়ে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করতো।

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বড় ধরনের গোয়েন্দা জাল ফেলে এলিট ফোর্স র‌্যাব জঙ্গিবাদে অর্থায়নের এ নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করার পাশাপাশি বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে হলিউড সিনেমা স্টাইলে জঙ্গিবাদে অর্থায়নের চিত্র।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্পেনের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান সিংটেল থেকে দেশীয় সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াহমি টেকনোলজি’র মাধ্যমে দেশে জঙ্গিবাদে অর্থায়নের প্রমাণ তারা পেয়েছেন।

তাদের গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, স্পেনের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান সিংটেল থেকে পাঠানো অর্থের ৪৭ শতাংশ বাংলাদেশে অফিস অবকাঠামো তৈরি ও কর্মচারীদের বেতনের জন্য খরচ করা হতো। আর বাকি ৫৩ শতাংশ যেতো জঙ্গি কার্যক্রমে।

র‌্যাব জানায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন ইন্টারন্যাশনাল সফটওয়্যার কোম্পানি ছিল আইব্যাক। বাংলাদেশসহ ৯টি দেশে এর শাখা খোলা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইফুল হক সুজন সিরিয়াতে বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়। জঙ্গিবাদে অর্থায়নের অভিযোগে ২০১৫ সালের দিকে আন্তর্জাতিক এই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

পরে প্রতিষ্ঠানটির মালিক হয় সুজনের ছোট ভাই আতাউল হক সবুজ। সে স্পেনে গিয়ে বসবাস শুরু করে। আতাউল হক সবুজ স্পেনে আইব্যাকের আদলে সিংটেল নামে প্রতিষ্ঠান চালু করে। এর আদলে বাংলাদেশে চালু হয় সফটওয়্যার কোম্পানি ওয়াহমি টেকনোলজি।

শনিবার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে ওয়াহমি টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানটি জড়িত আছে বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। কী প্রক্রিযার জঙ্গি অর্থায়ন এসেছে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সবাই তা অবগত ছিল।

আটক ১১ জনের মধ্যে সাতজন দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানি ওয়াহমি’তে কর্মরত ছিল। বাকি চারজন অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ২০১৫ সালে আইব্যাক নামের সফটওয়ার কোম্পানিটি জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের বাশারুজ্জামান চকলেটের মাধ্যমে তামিম চৌধুরীকে ৫০ হাজার ইউএস ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা দিতে চেয়েছিল। তখন বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেনে ফেলে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে আইব্যাকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।

বাংলাদেশে আইব্যাকের অফিস কাকরাইলে ছিল বলেও জানান মুফতি মাহমুদ খান। তবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদে ওয়াহমি’র মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ এসেছে তা জানায়নি র‌্যাব।