খুলনা বিভাগে বিএনপির সংসদীয় রাজনীতিতে অালোচনায় দেড় ডজন তারুণ্যদীপ্ত নতুন মুখ

প্রকাশিত: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭

খুলনা বিভাগে বিএনপির সংসদীয় রাজনীতিতে অালোচনায় দেড় ডজন তারুণ্যদীপ্ত নতুন মুখ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রায় এক যুগ ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবার আগেভাগেই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি তালিকা চূড়ান্ত করছে। এ নিয়ে দলের মধ্যেও বিরাজ করছে চাঙাভাব। এলাকায়ও শুরু হয়েছে নেতাদের নির্বাচনী তৎপরতা।

তবে বিপুল সংখ্যক তরুণ ভোটার বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় রেখে দলে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির অভিপ্রায়ে সব দলের মতো বিএনপিও চাইছে দলে তারুণ্যের জয়গান অানতে। সেই ধারাবাহিকতায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৩৬টি সংসদীয় আসনের মধ্য ১২ টি সংসদীয় অাসনে ১৬ জন তরুণ প্রার্থীর নাম অালোচনায় তুঙ্গে। পঞ্চাশের নিচে বয়স এসব তরুণ রাজনীতিবিদ প্রথমবারের মতো নিজ নিজ অাসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের স্বপ্ন দেখছেন। কাজ করছেন নিজ এলাকায়। দীর্ঘদিনের “ঘুণেধরা নেতৃত্বের” অবসান ঘটাতে সংসদ সদস্য হতে চান তারা। কোন্দল জর্জরিত এলাকাগুলোতে তারা অানতে চান ঐক্যর সুবাতাস।

অান্দোলনে “ব্যার্থ” বা কর্মীদের দেখভালে “ব্যার্থ” নেতৃত্বের পরিবর্তনের সূচনা করতে চায় এই একঝাক তরুণ। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতৃ্ত্বের যেকোনো নির্দেশনা বাস্তবায়নে মুখিয়ে অাছেন ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে অাসা এসব তরুণ রাজনীতিবিদ।

“তারুণ্যে যারা অকুতোভয়, তারাই অানবে সূর্যোদয়” বিএনপির এই স্লোগানের বাস্তব প্রমাণ দেখাতে চান এসব নেতারা।

এসকল নেতৃবৃন্দ যেসব অাসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন, সেগুলো হলো:
খুলনা-৩ (খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানা): তারেক রহমানের ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রকিবুল ইসলাম বকুল।
খুলনা-৪ (রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া): বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল।

যশোর-১ (শার্শা): স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও কলারোয়া কলেজের সাবেক ভিপি অালহাজ্ব মহসীন কবির।
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা): বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী।
যশোর-৩ (সদর): বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের পুত্র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
যশোর-৬ (কেশবপুর): বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক যুবদল নেতা অমলেন্দু দাস অপু।

চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবননগর-সদরের একাংশ): বিএনপির উপ-কোষাধ্যক্ষ ও খ্যাতনামা ব্যাবসায়ী নেতা মাহমুদ হাসান খান বাবু।

ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা): বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ও তারেক রহমানের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট মোঃ আসাদুজ্জামান এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল সহসভাপতি জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।
ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর): বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খান, তথ্য গবেষণা সহ-সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল এবং কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ): স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্মঅাহবায়ক বিএম নাজিম মাহমুদ।

কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা ও মিরপুর): প্রয়াত সংসদ সদস্য অাব্দুর রউফের পুত্র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী।

বাগেরহাট-৩ (মংলা-রামপাল): জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম।

এছাড়া অালোচনায় অারও কয়েকজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
তাদের মধ্য উল্লেখযোগ্য হলেন নড়াইল-২ (লোহাগড়া-সদর): সাতক্ষীরার সাবেক পৌর মেয়র জুলফিকার মন্ডল ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম।
যশোর-৫ (মণিরামপুর): স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক ছাত্রদল নেতা ইফতেখার সেলিম অগ্নি ও জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার শরিফুজ্জামান খান।
সাতক্ষীরা-২ (সদর): সাতক্ষীরা পৌর মেয়র ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি তাসকিন অাহমেদ চিশতী।
কুষ্টিয়া-৩(সদর): সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন সরকার।
ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর): ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তারেকুজ্জামান।
খুলনা-৩ (দৌলতপুর-খালিশপুর): খুলনা মহানগর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এসএম অারিফুর রহমান মিঠু প্রমুখ।

৩৬ টি সংসদীয় অাসনের মধ্য এবার অন্ততপক্ষে অর্ধেক অর্থাৎ ১৮ টি সংসদীয় অাসনে তরুণ ও নতুন মুখ দেখতে চান তারা, যাতে এতদাঞ্চলে দলের নেতৃত্বে নবীন-প্রবীণের একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমন্বয় শতভাগ সমন্বয় নিশ্চিত হবে। তাদের দাবী এসব তরুণ নেতার মূল্যায়ন হলে ছাত্রদল থেকে উঠে অাসা নেতারা দলের চালকের অাসনে অাসার সুযোগ পাবে। কারণ এসব নেতার মধ্য অধিকাংশ-ই সাবেক ছাত্রদল নেতা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ