ঢাকা ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:২০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
আজ ১০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী বাঘা যতীনের ১০২তম মৃত্যু শতবার্ষিকী।
বিপ্লবী বাঘা যতীন ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর দিনে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালির গড়াই নদীর তীরে কয়া গ্রামে মাতুল তলায় জন্মলাভ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম জ্যোতিন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। পিতা উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মাতা শরৎশশী। পৈত্রিক বাড়ি ছিল ঝিনাইদহ জেলায়। মাত্র ৫ বছর বয়সে পিতার মৃত্যু হয়। এর পর থেকে বাবার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। মা ছিলেন স্বভাবকবি। যতীনের বড় মামা বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় ছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরদের শিলাইদহের জমিদারীর আইনজীবী।
যতীন ছেলেবেলা থেকেই শারীরিক শক্তিতে অন্যতম ছিলেন। কুমারখালির কয়া গ্রাম হতে দুই কিলোমিটার দূরে রাধারপাড়া মাঠের আখ ক্ষেতে ছুরি দিয়ে বাঘ হত্যা করে নিজেকে রক্ষা করায় তার নাম হয়েছিল বাঘা যতীন।
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালির কয়া গ্রাম থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে কৃষ্ণনগরের অ্যাংলো ভার্নাকুলার হাই স্কুল হতে ১৮৯৮ সালে এন্ট্রান্স পাস করেন। এরপর ভর্তি হন কলকাতার সেন্ট্রাল কলেজে। পড়াশুনার পাশাপাশি টাইপরাইটারের কাজের প্রশিক্ষণ নেন। সেখানে সম্পৃক্ত হন কলকাতা সেন্টাল কলেজের বিপ্লবী গুপ্ত সমিতির কার্যক্রমের। ইস্তফা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠে। এর পর যুগান্তর দলের নেতা হয়ে তিনি দলকে আরও সুসংগঠিত করে বিপ্লবী অনুশীলন দলের সঙ্গে ঐক্য গড়ে তোলেন।
কলকাতা সেন্ট্রাল কলেজের পাশেই বাস করতেন স্বামী বিবেকানন্দ। দেশে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাবে স্বামী বিবেকানন্দের আহ্বানে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত হন।
১৮৯৯ সালে মফ:ফরপুরে ব্যারিস্টার কেনেডির সেক্রেটারি হিসাবে কাজে যোগ দেন। কেনেডি ভারতের বিভিন্ন গবেষণার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। কেনেডির উৎসাহে যতীন এলাকার তরুণদের ফুটবল ক্লাব গড়ে তোলেন। কেনেডি দুর্ভাগ্যক্রমে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর ছোড়া বোমায় মারা যান। কেনেডির সুপারিশে বাংলা সরকারের অর্থসচিব হেনরি হুইলারের স্টেনোগ্রাফার হিসাবে নিয়োগ পান।
১৯০৩ সালে শ্রী অরবিন্দের সাথে পরিচিত হয়ে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়েন। ১৯০৬ সালে বারীন ঘোষের সঙ্গে বোমা তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৭ সালের হুইলারের সাথে দার্জিলিংয়ে বদলি হলেন। ১৯০৮ সালে চারজন সামরিক অফিসারের সাথে শিলিগুড়ি স্টেশনে মারপিট হয় যা নিয়ে মামলা হয়। ১৯১০ সালের ২৭ জানুয়ারি হাওড়া ষড়যন্ত্র মামলায় যতীনকে গ্রেপ্তার করা হল। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ঝিনাইদহে ঠিকাদারের ব্যবসা শুরু করেন যশোর ঝিনাইদহ রেলপথ।
যতীন বালেশ্বরে পলায়নে থাকা অবস্থায় সারা দেশে শুরু সন্ধান যতীন জানালেন “আর পালানো নয়। যুদ্ধ করে আমরা মরব। তাতেই দেশ জাগবে”।
উড়িষ্যার মহাফেজখানার রক্ষিত নথিপত্র উদ্ধার করতে গিয়ে যতীন তার সঙ্গী সহ সশস্ত্র পুলিশের মুখোমুখি হলেন। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সূর্যাস্তের সংগে শেষ হল এই যুদ্ধের। যুদ্ধে আহত যতীন বালেশ্বর সরকারী হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন পরেরদিন।
হাসপাতালে রক্তবমির মধ্যে হাসতে হাসতে বলেছিলেন “এত রক্ত ছিল শরীরে? ভাগ্যক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পণ করে গেলাম দেশমাতার চরণে”।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com