কিশোর ইয়াছিন মল্লিক স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। প্রায় দেড় বছর আগে হঠাৎ শরীর অবশ হয়ে আসে। এরপর শয্যাশায়ী হয় সে। আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি। বিছানায় শুয়ে শুয়েই দিন কাটে তার। স্বপ্ন দেখে আবার উঠে দাঁড়ানোর, বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে গিয়ে দৌড়ঝাঁপ করার। কিন্তু শরীরে তার জটিল রোগ বাসা বেঁধেছে। চিকিৎসা করানোর সাধ্য তার নেই।
ইয়াছিন মল্লিক (১৩) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুঠিদুর্গাপুর গ্রামের বাদশা মল্লিকের ছেলে। ইয়াছিনের দেড় বছর বয়সে তার বাবা নিরুদ্দেশ হন। এরপর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। এক বছর অপেক্ষার পর ইয়াছিনের মা রেশমা খাতুন বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। ইয়াছিন থাকে দাদা-দাদির কাছে। ভূমিহীন দাদা সলিম উদ্দিন মল্লিক রিকশাভ্যান চালিয়ে সংসারের খরচ জোগান।
সলিম উদ্দিন মল্লিক প্রথমআলোকে বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে হঠাৎ করে ইয়াছিনের শরীর অবশ হয়ে যায়। সে হাঁটাচলা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয় সে। কিন্তু সেরে ওঠেনি। পরে তাকে নেওয়া হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও রোগ শনাক্ত করতে পারেননি। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু অর্থের অভাবে ইয়াছিনকে ঢাকায় নেওয়া যাচ্ছে না।
ইয়াছিনের দাদি জহুরা বেগম বলেন, ইয়াছিন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মরতে বসেছে। তাঁরা গরিব মানুষ। সমাজের হৃদয়বান মানুষের একটু সহযোগিতা পেলে তাঁর নাতিকে ঢাকায় নিয়ে যেতে পারতেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদ আল-মামুন বলেন, রোগটা গুইলিয়াম বেরি সিনড্রোম হতে পারে। এই রোগ শুরু হয় শরীরের নিচের অংশ থেকে। শরীরের সব পেশি দুর্বল করে দেয়। আস্তে আস্তে গোটা শরীরই পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাঁরা যে রোগ অনুমান করছেন, তা নির্ণয় করতে হলে ঢাকায় নেওয়া জরুরি।