‘বিসমিল্লাহ’ পড়বেন যে কারণে

প্রকাশিত: ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, মে ৪, ২০১৮

‘বিসমিল্লাহ’ পড়বেন যে কারণে

ইসলামি শরিয়তের হুকুম হলো সব কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা। আল্লাহ তাআলার শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা ও প্রতিষ্ঠা এবং বরকতের জন্য পড়া।

পশু-পাখিসহ হালাল প্রাণী জবাইকালে বিসমিল্লাহ বলা দ্বীন-ই-ইসলামের বিশেষত্ব ও মর্যাদাসম্পন্ন নিয়ম। আর বিসমিল্লাহ দ্বারাই শয়তানকে তাড়ানো হয়।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘খাওয়ার সময় বান্দা যদি আল্লাহ তাআলার নাম উচ্চারণ করে, তাহলে শয়তান তার সঙ্গে খেতে বসতে পারে না। আল্লাহর নাম উচ্চারণ না করলে শয়তান অবশ্যই খাওয়ায় শরিক হয়।’

ইসলাম অস্বীকারকারী ও মুশরিকরা দেব-দেবীর নামে কাজ-কর্ম শুরু করে। ওরা যাদের পূজা করে, তাদের এ সব শিরকি কাজকে বিসমিল্লাহ পড়ার মাধ্যমে অস্বীকার করা হয়। বিসমিল্লাহ পড়ার মাধ্যমে বান্দা একান্তভাবে আল্লাহমুখী হয়, আল্লাহর নেয়ামত লাভ করে এবং তাঁর কাছে আশ্রয় পাওয়া যায়।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে কাজ বিসমিল্লাহ ব্যতিত আরম্ভ করা হয়; তাতে কোনো বরকত থাকে না।’ তাইতো অন্য হাদিসে এসেছে-

‘ঘরের দরজা বন্ধ করতে বিসমিল্লাহ বলবে, ঘরের বাতি নেভাতেও বিসমিল্লাহ বলবে, পাত্র ঢাকতেও বিসমিল্লাহ বলবে। কোনো কিছু খেতে, পানি পান করতে, ওজু করতে, সওয়ারীতে আরোহন করতে এবং তা থেকে অবতরণ করতেও বিসমিল্লাহ বলা।’ এ নির্দেশ কুরআন-হাদিসে বারংবার দেয়া হয়েছে।

বিসমিল্লাহ পড়া প্রসঙ্গে আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, ‘শুধু কুরআন-ই নয় বরং অন্যান্য আসমানি কিতাবসমূহও ‘বিসমিল্লাহ’ দ্বারা আরম্ভ করা হয়েছিল।’

প্রিয়নসি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিসমিল্লাহ নাজিলের আগে নিজেও কোনো কিছু পড়তে, লিখতে এবং কাজ করতে ‘বিসমিকা আল্লাহুম্মা’ বলে শুরু করতেন।

যখনই ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ নাজিল হয়; তারপর থেকে এ বর্ণগুলোই গ্রহণ করা হলো এবং সর্বকালের জন্য ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলে সব কাজ শুরু করার নিয়ম প্রবর্তিত হলো।

মনে রাখা জরুরি-

ইসলাম মানুষের জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় কাজে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলে শুরু করার নির্দেশ দিয়ে মানুষের গোটা জীবনের গতি-প্রকৃতি অন্যসব কাজ থেকে ফিরিয়ে একমাত্র আল্লাহ তাআলার দিকে ধাবিত করেছে।

আল্লাহর নামে কাজ শুরু করার ঘোষণার মাধ্যমে প্রতিটি মুহূর্তই আল্লাহর আনুগত্যের স্বীকারোক্তি এভাবে নবায়ন করে যে, ‘আমার অস্তিত্ব ও আমার যাবতীয় কাজ-কর্ম আল্লাহর ইচ্ছা এবং সাহায্য ছাড়া সম্পন্ন হতে পারে না।
আর এ নিয়তের ফলে তার ওঠা-বসা, চলা-ফেরাসহ দুনিয়ার জীবনের সব কাজ-কর্মই আল্লাহর ইবাদতে পরিণত হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতিটি কাজে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলে শুরু করার তাওফিক দান করুন। আমিন।