ঝিনাইদহ ২ ও ৪ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ

প্রকাশিত: ১০:৫৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০১৮

নির্বাচন কমিশন দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে প্রায় ৬০টির সীমানা পরিবর্তন করে প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে এ সম্পর্কে আপত্তি বা পরামর্শ আহ্বান করা হতে পারে। তবে এই প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের একটি রায়ের বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে কমিশনের।

কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তালিকা প্রায় প্রস্তুত। গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব লুত্ফর রহমান বিশ্বাস এ কাজের পরামর্শক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। তিনি এ প্রাথমিক তালিকাটি খতিয়ে দেখছেন।

এদিকে ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, শেষ পর্যন্ত এবার আংশিক সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হলেও ভোটারবৈষম্য থেকেই যাচ্ছে। বর্তমান ভোটার তালিকা অনুসারে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখের ওপরে ভোটার রয়েছে ৯টি আসনে। অন্যদিকে দুই লাখের কম ভোটার রয়েছে দেশের চারটি আসনে। দুই লাখের ওপরে এবং আড়াই লাখের নিচে ভোটার রয়েছে ২৬টিতে। সীমানা পরিবর্তনের প্রাথমিক তালিকা : নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম এবারের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে গত রবিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তালিকা প্রায় প্রস্তুত। কুমিল্লা-১০ আসনের বিষয়ে আপিলের রায়ের জন্যও আমরা অপেক্ষায় রয়েছি।’

আদালতের আদেশ অনুসারে জাতীয় সংসদের কুমিল্লা-১০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ না করায় গত ১০ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্বাচন কমিশন সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশন ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। আপিলের রায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষে না এলে অন্য সব আসনের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে সীমানা পুনর্নির্ধারণে এটি নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা প্রয়োজন বলেও নির্বাচন কর্মকর্তাদের কারো কারো অভিমত।

জানা যায়, ২০০১ সালের নির্বাচনে নাঙ্গলকোট ও কুমিল্লা সদর (দক্ষিণ) উপজেলা নিয়ে পৃথক দুটি নির্বাচনী আসন (যথাক্রমে কুমিল্লা-১১ ও কুমিল্লা-৯) ছিল। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এই দুটি আসন পুনর্বিন্যাস করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নাঙ্গলকোট উপজেলার সঙ্গে সীমানা বাড়িয়ে কুমিল্লা সদর (দক্ষিণ) উপজেলার আটটি ইউনিয়নকে যুক্ত করে কুমিল্লা-১০ আসন করা হয়। এভাবে আসন পুনর্বিন্যাস করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। আবেদনে শুধু নাঙ্গলকোট উপজেলা নিয়ে এ আসন করার দাবি করা হয়। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে গত বছরের ২০ মার্চ হাইকোর্ট এক রায়ে ওই আসন এলাকা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নিতে ইসিকে নির্দেশ দেন।

যেসব আসনের সীমানা পরিবর্তন হতে পারে : ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, এবার সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য যে নীতি গ্রহণ করা হয়েছে তা হলো ২০১৩ সালের নির্ধারিত জেলাভিত্তিক মোট আসন অপরিবর্তিত রাখা, সংসদীয় আসন জেলাভিত্তিক বণ্টন ও এক জেলার আসনের এলাকা অন্য জেলায় সম্প্রসারণ না করা, যেখানে সম্ভব উপজেলা, পৌর ও নগর এলাকা অবিভাজিত রাখা এবং ভৌগোলিক ও যোগাযোগব্যবস্থা বিবেচনায় নেওয়া। এ ছাড়া এবার বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোকেও সংশ্লিষ্ট আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। নতুন যে কয়েকটি উপজেলা গঠন করা হয়েছে তাতেও সংশ্লিষ্ট সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আসবে। সীমানা পুনর্নির্ধারণের জন্য প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে প্রায় ৬০টি আসন। এর মধ্যে রয়েছে ঠাকুরগাঁও ২ ও ৩ আসন; নীলফামারী ৩ ও ৪, কুড়িগ্রাম ৩ ও ৪, সিরাজগঞ্জ-১ ও ২, পাবনা ১ ও ২; চুয়াডাঙ্গা ১ ও ২; ঝিনাইদহ ২ ও ৪; যশোর-৩ ও ৪; মাগুরা-১ ও ২; নড়াইল ১ ও ২; খুলনা ৩ ও ৫; সাতক্ষীরা ৩ ও ৪, জামালপুর ৪ ও ৫; ময়মনসিংহ ৩ ও ৪, মানিকগঞ্জ ২ ও ৩; ঢাকা ২, ৩, ৪, ১৪ ও ১৯; গাজীপুর ৩ ও ৫; নরসিংদী ১ ও ২; ফরিদপুর ২ ও ৪; গোপালগঞ্জ ১ ও ২; মাদারীপুর ২ ও ৩; সিলেট ২ ও ৩; মৌলভীবাজার ২ ও ৪; ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫ ও ৬; কুমিল্লা ১০; নোয়াখালী ১, ২, ৪ ও ৫;  লক্ষ্মীপুর ২ ও ৩,  চট্টগ্রাম ৭, ৮, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫।

এর আগে ২০১৩ সালে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন সীমানা পরিবর্তনের জন্য ৮৭টি আসনের প্রাথমিক তালিকা করে। কিন্তু নানা ধরনের দাবি, আপত্তি ও রাজনৈতিক সুপারিশের কারণে শেষ পর্যন্ত সীমানা পরিবর্তন হওয়া আসনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৩।

ভোটার সংখ্যায় বৈষম্য : এদিকে বর্তমান নির্বাচন কমিশন তাদের কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপে এবার ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে সংসদীয় আসনগুলোর সীমানা পুনর্নির্ধারণ এবং সেই লক্ষ্যে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেও তা হচ্ছে না। কমিশন নতুন আইন প্রণয়নের জন্য যে প্রস্তাব প্রস্তুত করছে, তা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরবর্তী সময়ের জন্য। সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে  রোডম্যাপের সর্বশেষ সময়ও পার হয়ে গেছে গত ডিসেম্বরেই। এ অবস্থায় যত দ্রুত সম্ভব কাজটি সম্পন্ন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

বর্তমান ভোটার তালিকা অনুসারে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখের ওপরে ভোটার রয়েছে ৯টি আসনে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সাত লাখ ৩১ হাজার ৬৯২ ভোটার রয়েছে সাভারের বেশির ভাগ অংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৯ আসনে। সাত লাখ ২১ হাজার ৬২৫ ভোটার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৯ থেকে ১৮ ও ৪৩ থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং গাজীপুর সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত গাজীপুর-২ আসন। এ ছাড়া কালিয়াকৈর এবং গাজীপুর সিটির ১ থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড  নিয়ে গঠিত গাজীপুর-১ আসনের ভোটার ছয় লাখ ৪৭ হাজার ৫৯ জন;  ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ভোটার ছয় লাখ ৩৬ হাজার ১৮৩ জন; ময়মনসিংহ সদর নিয়ে গঠিত মংমনসিংহ-৪ আসনের ভোটার পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬৭ জন; ঢাকা উত্তর সিটির ১ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও ডুমনি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৮ আসনের ভোটার পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ৮৭০ জন; সিলেট সিটি ও সিলেট সদর নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনের ভোটার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ২৮০ জন; যশোর সদরের আংশিক এলাকা নিয়ে গঠিত যশোর-৩ আসনের ভোটার পাঁচ লাখ ৯ হাজার ৭৮৩ জন এবং চট্টগ্রাম সিটির ২৭ থেকে ৩০ ও ৩৭ থেকে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-১১ আসনের ভোটার পাঁচ লাখ এক হাজার ৯৫৩ জন।

অন্যদিকে দুই লাখের কম ভোটার রয়েছে দেশের চারটি আসনে। এর মধ্যে সবচেয়ে কম এক লাখ ৭৪ হাজার ১২৪ জন ভোটার রয়েছে ঝালকাঠি-১ আসনে। কম ভোটারের আসনগুলোর মধ্যে এক লাখ ৮৪ হাজার ৩৮২ জন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মঠবাড়িয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-৩ আসন। এ ছাড়া খুলনা-৩ আসনের ভোটার এক লাখ ৯১ হাজার ৬১৪ জন এবং যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের ভোটার এক লাখ ৯১ হাজার ৩১৭ জন।

দুই লাখের ওপরে এবং আড়াই লাখের নিচে ভোটার রয়েছে দেশের ২৬টি আসনে। এগুলো হচ্ছে লালমনিরহাট-৩ (সদর), রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া), কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, রাজিবপুর, উলিপুর ও চিলমারীর আংশিক), মেহেরপুর-২ (গাংনী), নড়াইল-১, পটুয়াখালী-২ (বাউফল), পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালি), বরিশাল-৩ (মুলাদী ও বাবুগঞ্জ), বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ), পিরোজপুর-২ (সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ), জামালপুর-২ (ইসলামপুর), ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর), নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা), ঢাকা-৪ (ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৪৭ ও ৫১ থেকে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং শ্যামপুরের আংশিক), নরসিংদী-৩ (শিবপুর), গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া), শরীয়তপুর-৩ (ডামুড্যা, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ), সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই ও শাল্লা), ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর), ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর ও বুড়িচং), কুমিল্লা-৮ (বরুড়া), নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া), চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি), চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার আংশিক) ও বান্দরবান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

vulkan vegas, vulkan casino, vulkan vegas casino, vulkan vegas login, vulkan vegas deutschland, vulkan vegas bonus code, vulkan vegas promo code, vulkan vegas österreich, vulkan vegas erfahrung, vulkan vegas bonus code 50 freispiele, 1win, 1 win, 1win az, 1win giriş, 1win aviator, 1 win az, 1win azerbaycan, 1win yukle, pin up, pinup, pin up casino, pin-up, pinup az, pin-up casino giriş, pin-up casino, pin-up kazino, pin up azerbaycan, pin up az, mostbet, mostbet uz, mostbet skachat, mostbet apk, mostbet uz kirish, mostbet online, mostbet casino, mostbet o'ynash, mostbet uz online, most bet, mostbet, mostbet az, mostbet giriş, mostbet yukle, mostbet indir, mostbet aviator, mostbet casino, mostbet azerbaycan, mostbet yükle, mostbet qeydiyyat