সংস্কারের উদ্যোগ নেই, যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে চলছে সওজ’র জোড়াতালির নামে লুটপাট

প্রকাশিত: ১২:১৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০১৭

সংস্কারের উদ্যোগ নেই, যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে চলছে সওজ’র জোড়াতালির নামে লুটপাট

বছরের পর বছর ধরে যশোরের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে সংস্কারের নামে চলছে জোড়াতালি। বর্তমানে মহাসড়কগুলোতে বড় বড় গর্ত, খানাখন্দ ইট ও বালি ফেলে ভরাট করার কাজ চলছে। কিন্তু বৃষ্টি ও অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে পরণেই সেই ইট উঠে গিয়ে আরও খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। মহাসড়কে গাড়ি চলাচল হয়ে উঠছে ঝুঁকিপূর্ণ।

 

ইট, বালি ও খোয়া দিয়ে জোড়াতালির মাধ্যমে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও তার অগ্রগতি কচ্ছপ গতিতে এগুচ্ছে। ফলে এসব কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। সড়ক বিভাগ বলছে, বৃষ্টির কারণে রাস্তা সংস্কারের কাজ পিছিয়ে গেছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সড়ক পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হবে।

 

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গেল জুলাইয়ে যশোরে ভারি বৃষ্টিপাতে পাঁচটি জাতীয় সড়কসহ দুটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়ক ব্যাপক তিগ্রস্ত হয়। এতে তি হয় ১০ কোটি টাকারও বেশি। এরপর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে কয়েকদফা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কগুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ পর্যায়ে চলে যায়। তিগ্রস্ত জাতীয় সড়কগুলো হলো, যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-মাগুরা ও যশোর-নড়াইল।

 

সূত্রটি জানায়, যশোর-খুলনা মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটারের মধ্যে চাঁচড়া মোড়, মুড়লী, রাজঘাট, বসুন্দিয়া, প্রেমবাগ, চেঙ্গুটিয়া ও ভাঙ্গাগেট এলাকায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর যশোর- বেনাপোল সড়কের পুলেরহাট থেকে নাভারণ মোড় পর্যন্ত চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১২ কিলোমিটার একেবারেই বেহাল। যশোর-মাগুরা সড়কের ২২ দশমিক ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কদমতলী ও পুলেরহাট থেকে লেবুতলা বাজার ও রজনীগন্ধা পাম্প পর্যন্ত খানাখন্দে ভরে গেছে। আর যশোর-নড়াইল সড়কের হামিদপুর থেকে ২০ কিলোমিটারের পুরো অংশেই অসংখ্য বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালে যশোর শহরের দড়াটানা মোড় থেকে নাভারণ মোড় পর্যন্ত বেনাপোল মহাসড়কের ২৩ কিলোমিটারে বিটুমিনের আস্তরণ দেয়া হয়। কিন্তু এক বছর না যেতেই মহাসড়কের ওই অংশের কয়েকটি জায়গার বিটুমিন উঠে যায়। এছাড়া ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটারের বিটুমিনের আস্তরণও উঠে গেছে। এ উপজেলার কপোতা নদের ওপর নির্মিত সেতুর দুইপাশের অন্তত আধা কিলোমিটারের অবস্থা খুবই বেহাল। তাছাড়া সেতুর পাটাতনও ফেটে গেছে। বর্তমান ওই সড়কটি দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

 

একই অবস্থা যশোর-মাগুরা ও ঝিনাইদহ সড়কের। সংস্কারের অভাবে এসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল দায় হয়ে পড়েছে। এসব সড়কে সংস্কারের নামে সওজ কর্তৃপক্ষ রীতিমত তামাশা শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, যশোর-মাগুরা সড়কে সংস্কারের নামে জোড়াতালির কাজ চলছে। সড়কের হাসিমপুর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিম্নমানের ইটের খোয়া ও বালি দিয়ে বড় বড় গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, কোন রকম দায়সারা গোছে রাস্তার উপর থেকে উঠে যাওয়া বালি ও খোয়ার জায়গায় পুটিং দেয়া হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি আগের অবস্থায় ফিরে যাবে বলে উপস্থিত কয়েকজন পথচারী জানান।
ট্রাকচালক আব্দুল মালেক বলেন, মহাসড়কে ইট, বালি দিয়ে গর্ত ভরার এ সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের। গত কয়েকবছর ধরে এই সড়কে একাধিকবার বড় বড় গর্ত ইট-বালি দিয়ে পুটিং দেয়া হলেও সামান্য বৃষ্টিতে তা আবারও উঠে যায়। বৃষ্টির মধ্যে ভারি যানবাহন চলার কারণে ইট-বালি, খোয়া উঠে আগের অবস্থার চেয়ে আরও ভয়াবহ রুপ নেয়।

 

স্থানীয়রা অভিযোগে জানান, রাস্তায় বিটুমিন দিয়ে সংস্কারের সরকারি টাকা লুটপাট করছে সওজ বিভাগ। যা একটু ভারি বৃষ্টি হলেই আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। বরং এর কারণে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়ছে।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের নিজস্ব উদ্যোগে এসব কাজ করা হচ্ছে। এটি আমাদের নিয়মিত কাজ। এ ক্ষেত্রে কোন টেন্ডার আহবান করা হয়নি। তিনি বলেন, সড়কের গর্ত বন্ধের জন্য ইট-বালি, খোয়া দেয়া হচ্ছে যাতে গাড়িগুলো স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে সে জন্য। তবে অনিয়মের যে অভিযোগ এটি সঠিক নয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যশোর-খুলনা ও যশোর-বেনাপোল সড়ক সংস্কারের জন্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক দুটির কাজ শুরু হবে। বাকি সড়কগুলো সংস্কারে অর্থের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করা হয়েছে।

 

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কগুলো সংস্কার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন সড়ক পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, প্রতিনিয়ত লোক দেখানো এ সংস্কার কাজে তারা আর সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। পরিবহন শ্রমিক সমিতির সাবেক নেতা আজিজুল আলম মিন্টু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের সড়কের বেহাল দশা। অথচ সড়ক সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, বর্ষা আসলেই সড়ক সংস্কারের নামে গর্তে ইট-বালি দিয়ে জোড়াতালি দেয়া হয়। এতে যান চলাচল বেশি সমস্যা হয়। তিনি এসব জোড়াতালির কাজ না করে দ্রুত পূর্ণাঙ্গভাবে সড়ক সংস্কারের দাবি জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

vulkan vegas, vulkan casino, vulkan vegas casino, vulkan vegas login, vulkan vegas deutschland, vulkan vegas bonus code, vulkan vegas promo code, vulkan vegas österreich, vulkan vegas erfahrung, vulkan vegas bonus code 50 freispiele, 1win, 1 win, 1win az, 1win giriş, 1win aviator, 1 win az, 1win azerbaycan, 1win yukle, pin up, pinup, pin up casino, pin-up, pinup az, pin-up casino giriş, pin-up casino, pin-up kazino, pin up azerbaycan, pin up az, mostbet, mostbet uz, mostbet skachat, mostbet apk, mostbet uz kirish, mostbet online, mostbet casino, mostbet o'ynash, mostbet uz online, most bet, mostbet, mostbet az, mostbet giriş, mostbet yukle, mostbet indir, mostbet aviator, mostbet casino, mostbet azerbaycan, mostbet yükle, mostbet qeydiyyat