ঢাকা ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২৩ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৭
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি • ঝিনাইদহ শহর থেকে ৫ কিমি উত্তরে কুষ্টিয়া মহাসড়কের উত্তর পাশে নিরিবিলি পরিবেশে অবস্থিত ডিএই’র প্রশিক্ষণ উইং-এর আওতাধীন ‘কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
দেশের ১৬টি সরকারী কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউটের মধ্যে অন্যতম। প্রতিষ্ঠানটির পাশে রয়েছে ছোট্ট একটি বাজার, সাথে রয়েছে তামান্না ফ্যামিলি পার্ক ও পিকনিক স্পট। শহরের কোলাহল মুক্ত শিক্ষার মনোরম পরিবেশ।
প্রতিষ্ঠানটির জন্য ২০০৬ সালে জমি অধিগ্রহণ করা হয় এবং ২০০৯ সালে এই প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অধিগ্রহণকৃত ২১.৩৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের ৩০ অক্টোবর।
এখানে রয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন যেখানে ১০টি ক্লাস রুম, ৫টি ল্যাবরেটরি কক্ষ, একটি লাইব্রেরি কক্ষ, মিটিং ও কনফারেন্স রুম এবং প্রশিক্ষকদের জন্য কক্ষ।
কৃষক প্রশিক্ষণ ইউনিট হিসেবে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য একটি তিন তলা ভবন আছে যেখানে রয়েছে কৃষক, কৃষিকর্মী, কৃষি কর্মকর্তাসহ আগ্রহী গ্রুপের জন্য আবাসিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
ছাত্র-ছাত্রীরে জন্য রয়েছে আবাসিক ব্যবস্থা। আছে ডাইনিং হল। অধ্যক্ষের জন্যও আছে দ্বিতল বাসভবন। নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আছে সাব-স্টেশন ভবন, নিজস্ব মালামাল সংরক্ষণের জন্য গুদাম ঘর, কর্মচারীদের বসবাসের জন্য রয়েছে চার ইউনিটের একটি দোতালা ভবন এবং আবাসিক এলাকায় রয়েছে সুগভির পুকুর। প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে দশ কোটি উনসত্তর লাখ টাকা।
৮ অক্টোবর ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন । ২৮ অক্টোবর প্রথমবারের মত ২৮ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে এ ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে ২৭ জন ছাত্র ও ১ জন ছাত্রী।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বের্ডের সিলেবাস অনুযায়ী এখানে আটটি সেমিস্টারে চার বছর মেয়াদী কৃষি ডিপ্লোমা কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। সেই সাথে কৃষক-কৃষাণী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের সম্প্রসারণ কর্মীদের বিষয় ভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। আগ্রহী অন্য প্রতিষ্ঠানসমূহ ইনস্টিটিউটের প্রশিক্ষণ সুবিধাদি গ্রহণ করতে পারে।
৫ বছরের ব্যবধানে বর্তমানে ইনস্টিটিউটে ছাত্র-ছত্রীর সংখ্যা ৫০৮ জন। প্রশিক্ষকের সংখ্যা ১৫ জন। এছাড়া অন্য পদে কর্মরত রয়েছে ১৩ জন।
আগামি দিনের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মির জন্য মাঠের চাহিদা ভিত্তিক বিজ্ঞানসম্মত, আধুনিক ও প্রায়োগিক কৃষিশিক্ষা কার্যক্রম, পরিবেশ বন্ধব চাষাবাদ ও উৎপাদিত পন্য সঠিকভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে, স্বাস্থ্য-ঝুঁকিবিহীন খাদ্য সহজলভ্য করে ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ আবাসস্থল ও কৃষি আত্মনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের কৃষি বিষয়ে হাতেকলমে শিক্ষা দিতে এখানে প্রচলিত আছে ‘শিখি করি খাই’ প্রকল্প।
এখানে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য নির্দিষ্টভাবে একটি করে জমির প্লট ভাগ করে দেয়া আছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ফসল চাষের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
এমনকি ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রমভিত্তিক কার্যক্রমের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে উৎপাদিত পন্য বাজারজাত করে তারা ‘সেমিস্টার টিউশন ফি’ পেয়ে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের জানান, বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। তবে আমরা যদি আরো সুযোগ-সুবিধা পাই তাহলেই কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটটের শিক্ষার্থীরা দক্ষ কৃষিবিদ হিসেবে গড়ে উঠবে। তারা জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ব্যাপক অবদান রাখবে। তিনি ইনস্টিটিউটের সার্বিক উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
Design and developed by zahidit.com