পূজা উপলক্ষ্যে ব্যস্ত ঝিনাইদহের গহনা পল্লীর কারিগররা

প্রকাশিত: ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭

পূজা উপলক্ষ্যে ব্যস্ত ঝিনাইদহের গহনা পল্লীর কারিগররা

 

আহমেদ নাসিম আনসারী


চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দূর্গা পূজা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে ঝিনাইদহের গহনা পল্লী।

গহনা পল্লীতে আসা রাধা অধিকারী জানান, গহনা সকল মেয়েদের কাছেই খুব পছন্দের। মা দূর্গা যেমন সেজে মর্তে আসেন আমরাও হিন্দু নারীরা ঠিক সেই ভাবেই সেজে মাকে স্বাগতম জানাতে চাই। মা যেন আমাদের দেখে খুশি হন। আমাদের সর্বদা আশির্বাদ করেন।
তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, সোনার দাম বাড়তির দিকে। আমাদের আনন্দে একটু ভাটাও পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারা বছর এখানকার গয়না তৈরির পেশার সাথে জড়িতরা ব্যস্ত সময় পাড় করলেও নানা কারণে বছরের কিছু সময় তা কমে যায় বলে জানান তারা। আগে রূপার তৈরি গয়নার চাহিদা ছিলো অনেক বেশি। কিন্তু এখন রূপার বাজার মূল্য চড়া হওয়ায় পুঁজির অভাবে তারা কাঁচামাল ক্রয় করে গয়না তৈরি করতে পারছেন না।
আরও জানা যায়, এখানকার ব্যবসায়ীদের অনেকের পুঁজি নেই বললেই চলে। তাই বেশির ভাগ সময় চড়া সুদে তাদের ঋণ নিতে হয়। সঠিক সময় ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে পোহাতে হয় নানা ঝক্কি। তাছাড়া অন্য অনেক খাতে ঋণ পাওয়া গেলেও গয়না তৈরির জন্য কোনো ব্যাংক বা এনজিও প্রতিষ্ঠান ঋণ দেয় না। এর ফলে গহনা তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত কম আয়ের মানুষজন তাদের ব্যবসার আকার বাড়াতে পারছেন না।

ঝিনাইদহ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক পঞ্চরেশ পোদ্দার জানান, বর্তমানে সোনার ভরি ১৮ ক্যারট ৪১ হাজার ৯০০ টাকা, ২১ ক্যারট ৪৭ হাজার ৮০০ টাকা এবং ২২ ক্যারট ৫০ হাজার ১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তিনি অরও জানান, রুপার ভরি বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা।

ঝিনাইদহ স্বর্ণ ব্যবসায়ী তুষার রায়, বাপ্পী সরকার, বিকাশ রায় জানান, এক সময় সোনার ব্যবসা খুব জমজমাট ব্যবসা ছিল। কিন্তু এখন তা নেই। আসলে সোনার ব্যবসা পুরোপুরি নির্ভর করে বিশ্ব রাজনিতীর উপর। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। আগে অনেক স্বর্ন ব্যবসায়ী ছিল তারা এখন আর নেই। তবে হ্যা, বছরের বিশেষ সময়ে অবশ্যই একটু জমজমাট তো হয়ই। পূজোতে আমাদের বাড়তি চাপ আছে।

ঝিনাইদহ জুয়েলার্স সমিতির সাভাপতি সাধন চন্দ্র জানান, বাপ-দাদার এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন খুব কঠিন। তারপরও বলবো আমার ঝিনাইদহে প্রায় শতাধিক স্বর্ণের দোকান আছে। বাজারটা বেশ অস্থিতিশীল গত কয়েক বছর হলো। টিকলী, টায়রা, বিছা, কানের দুল, হাতের বালা, নূপুর ও নোলকসহ নানা আকর্ষণীয় গয়না তৈরিতে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে প্রায় হাজারখানেক গয়না তৈরির কারিগরদের।