হরিণাকুণ্ডে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা! ইউপি সদস্যদের প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ৩:০৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০

হরিণাকুণ্ডে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা! ইউপি সদস্যদের প্রতিবাদ

হরিণাকুণ্ডু-

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৩নং তাহেরহুদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ওই পরিষদের নারী সদস্য নাছিমা আক্তার মায়া।
তিনি ঝিনাইদহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং এনটিসি পিটিশন ৬৯/২০২০।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আল রাজি মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হরিণাকুণ্ডু থানার ওসিকে আদেশ দেন।
মামলায় বাদী নাছিমা আক্তার মায়া জানিয়েছেন, গত ১২ ফেব্রয়ারি তিনি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কাজ করছিলেন। দুপুর পর একে একে সব ইউপি সদস্য ও অন্যরা চলে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান তাকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে কু-প্রস্তাব দেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে রুমের মেঝেতে ফেলে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এসময় ধস্তাধস্তিতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয় বলে তিনি জানান। এঘটনায় তিনি ভবানীপুর গ্রামের আল আমিন, মিন্টু মোল্লা, শরিফুলসহ ৬ জনকে স্বাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে এঘটনায় ইউপি সদস্য, মামলার স্বাক্ষী ও স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা মামলাটিকে মিথ্যা বলে দাবী করেছেন।
এবিষয়ে মামলার স্বাক্ষী আল আমিন বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ন মিথ্যা। আমি এ ধরনের কোন ঘটনা জানি না। আমার সামনে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। একই কথা বলেন স্বাক্ষী মিন্টু মোল্লা, শরিফুলসহ অন্যরা।
ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য ওহিদুল ইসলাম, আলমঙ্গীর হোসেন, নুর আলীসহ ৭ ইউপি সদস্য মামলাটিকে মিথ্যা দাবী করে বলেন, ওই নারী সদস্য আমাদের ৭ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আমরা আদালত থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে নাছিমা আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করি। এঘটনায় সে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আসাদুজ্জামান লিটন বলেন, আমি সারাদিন পরিষদে ছিলাম। আমার জানামতে সেদিন এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের সাথে ওই নারী মেম্বরের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। সে কারণে মিথ্যা মামলা করা হতে পারে।
এবিষয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলমের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে গেছেন বলে জানান ইউপি সদস্যরা।
এদিকে থানা পুলিশ সুত্রে জানাগেছে, গত ১৩ ফেব্রয়ারি এবিষয়ে নারী সদস্য নাছিমা আক্তার মায়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। জানতে চাইলে ওই অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। স্বাক্ষীরাও ঘটনাটি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. জামিনুর রশিদ বলেন, ১২ ফেব্রয়ারি দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে ওই নারী সদস্য মারামারির কথা উল্লেখ করে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন সকালে ওই নারী তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানালে আমরা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করি।
এবিষয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, আমি এখনও আদালতের আদেশ হাতে পাইনি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ