মহেশপুরে মাটি বাহী ট্রাক্টরের কারনে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত রাস্তা

প্রকাশিত: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২২

মহেশপুরে মাটি বাহী ট্রাক্টরের কারনে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত রাস্তা

জিয়াউর রহমান জিয়া ,মহেশপুর(ঝিনাইদহ)ঃ

ঝিনাইদহের মহেশপরে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত সরকারী রাস্তা নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটার মাটিবাহী ট্রাক্টরের কারনে। একের পর এক রাস্তা নষ্ট হলেও প্রশাসন রয়েছে নিরব দর্শকের ভূমিকায়। এক প্রকার সড়কের ঘাতক বলে পরিচিত ট্রাক্টরের দখলে রয়েছে পৌর এলাকাসহ সীমান্তবর্তী উপজেলার সংযুক্ত রাস্তা গুলো।

ট্রাক্টরের কারনে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে কাঁচা ও পাঁকা রাস্তা গুলো। এছাড়াও এ সকল ট্রাক্টরের বেপরোয়া গতিতে চলাচলের কারনে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা।

গ্রামীর সড়কে চলাচলকারী এবং রাস্তার পাশে বসবাস কৃত জনসাধারণ অবৈধ্য ট্রাক্টরের জুলুমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। উপজেলা এলাকার মহাসড়ক ও গ্রামীন সড়কে অবাধে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নিষিদ্ধ এ ট্রাক্টর গুলো। চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর এখন অবৈধ ট্রাক বা পরিবহন হয়ে গ্রামীন জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। যা সড়কের বেহাল দশা করে আবার ধুলিকনা সৃষ্টি করে।

মহেশপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন নতুন নতুন রাস্তার পরিস্থিতি রাস্তা মাটি বোঝাই অবৈধ ট্রাক্টরের চলাচলের কারেণ ধুলোর সৃস্টি হচ্ছে। আর রাস্তায় কাঁদা পড়ে থাকার কারণে একটু বৃষ্টিতে মরণ ফাঁদে পরিনত হচ্ছে। বেপরোয়া চলাচলে শব্দ দূষনেও আশপাশের গ্রামের রাস্তায় চলাচলকারী জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।
উপজেলার সবকটি ইটভাটায় ইট,বালি,মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এসকল ট্রাক্টর। এসব ট্রাক্টরের নেই কোন রোডপার্মিট,তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর চালানোর সুযোগ পাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়কে প্রাণহানী।

অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলের কারণে এলাকার স্থানীয়রা জানান,সরকারের কোটি কোটি টাকার রাস্তাঘাট ধ্বংশ করছে ইট ভাটার ট্রাক্টর গুলো। তারা সল্পমূল্যে ফসলি জমি ও পুকুর খননের মাটি কিনে পরিবহনের ফলে বিলীন হচ্ছে রাস্তাঘাট এবং ট্রাক্টরের চাকায় ধ্বংশ হচ্ছে মহাসড়ক সহ গ্রামের সদ্য নির্মিত কাঁচা আধাপাকা ও পাকা সড়ক গুলো।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) শাহরিয়া আকাশ বলেন,মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের চলাচলের কারণে নব-নির্মিত পাকা রাস্তা গুলোর ক্ষতি হচ্ছে। তারপরও আমরা কিছু করতে পারছি না,কারণ মাটি বোঝাই ট্রাক্টর গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের না।

স্থানীয়দের অভিযোগ এসব যন্ত্রদানবের প্রতি স্থানীয় প্রশাসন একেবারেই উদাসিন। এলাকার প্রভাবশালীদের খুঁটির জোরে এ সকল ট্রাক্টর চলছে বহাল তবিয়তে। স্থানীয়রা আরো জানান,মাটি বোঝাই অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলে যাদের স্বার্থ রক্ষা হয়,তারা কি অকাল ও অস্বাভাবীক মৃত্যু রোধে সকল কিছুরই সমাধানের চেষ্টা করছে। ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচল রাস্তাঘাট ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা যেন মরণ ফাঁদে পরিনত । কৃষি জমির উর্বরতা টপসয়েল কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে ইট ভাটায়। রোডপার্মিট বিহীন ট্রাক্টর ও লাইসেন্স বিহীন চালকের কারণে দোকান পাট,রাস্তাঘাটে চলাচলকারী মানুষ সার্বক্ষনিক উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। বিকট শব্দে মাটি বোঝাই নিয়ে সাদা পাউডারের মত ধুলো উড়িয়ে দাপিয়ে চলছে এ সকল ট্রক্টর।

মহেশপুর উপজেলা সহকারী (ভূমি) শরীফ শাওন জনান, আমি যোগদানের পর থেকে মাটি ও বালি উক্তলনের বিরুদ্ধে বেশে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জেল-জরিমানা করেছি। তিনি আরও বলেন, মাটি ও বলি উক্তলনের সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে মোবাইল কোটের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, কে কার জমি থেকে মাটি কাটছে আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমাকে জানালে আমি আইন গতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।