ঝিনাইদহে পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন

প্রকাশিত: ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০১৭

ঝিনাইদহে পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন

ঝিনাইদহে পাটখড়ি পুড়িয়ে তৈরি কার্বন রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। সৃষ্টি হয়েছে গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান। আর চড়া দামে পাটখড়ি বিক্রি হচ্ছে। আসছে বৈদেশিক মুদ্রা। সদর উপজেলার অচিন্ত্যনগর ও লক্ষ্মীপুরে এ ধরনের দুটি কারখানা তৈরি হয়েছে।

অনেক আগে থেকে ঝিনাইদহ জেলা পাট চাষের জন্য বিখ্যাত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাট চাষ বেড়েছে। এ বছর ২৪ হাজার এক’শ ৭২ হেক্টরে পাট চাষ হয়েছে। পাটের উপজাত হিসাবে পাওয়া যায় পাটখড়ি। ২০১৩ সালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার অচিন্ত্যনগর গ্রামে তাজি এ্যাগো ইন্ডাস্ট্রিজ লি. নামে একটি কারখানা স্থাপিত হয়। এ কারখানায় পাটখড়ি পুড়িয়ে তৈরি করা হয় কার্বন। রপ্তানি করা হয় চীনে। অর্জিত হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। কারখানা খুব ব্যয়বহুল নয়। আছে ৩২টি চুল্লি (স্টোভ)। তার ভিতর সন্ধ্যায় পাটখড়ি দিয়ে হালকা তাপে ভোর পর্যন্ত পোড়ানো হয়। সকালে চুল্লির মুখ বন্ধ করে রাখা হয় সাত দিন। পাটখড়ি পুড়ে কয়লায় পরিণত হয়। তারপর চুল্লি থেকে কয়লা বের করে মেশিনে পাউডার বানানো হয়। এ পাউডার বস্তায় ভরে কন্টেইনার বোঝাই করে রপ্তানি করা হয়। এ কারখানায় বছরে চার’শ থেকে পাঁচ’শ টন কার্বন উত্পাদন হয়। যার সবটাই রপ্তানি হয়ে থাকে। এলাকার ৬০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রতি কেজি পাটখড়ি সাড়ে চার টাকা দরে কেনা হয়। এতে পাটখড়ির দাম চড়ে গেছে। আগে পাটখড়ি রান্নার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। একটা বড় অংশ পচে নষ্ট হতো। এখন চাষি যত্ন করে পাটখড়ি সংরক্ষণ করে। পাটখড়ির কার্বন থেকে আতশবাজি, প্রিন্টারের কালী, ফেসওয়াশসহ ৩৫/৪০ প্রকার পণ্য তৈরি হয় বলে জানা গেছে। আগে প্রতি টনের রপ্তানি মূল্য ছিল ১২’শ ডলার। বর্তমানে দাম পড়ে ৭’শ ডলারে নেমে এসেছে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত কারখানায় উত্পাদন হয়। তারপর অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকে।

তবে পাটখড়ি পোড়ানোর সময় ধোঁয়ায় পরিবেশের ক্ষতি করে। সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুরে আরো একটি কারখানা স্থাপিত হয়েছে। তবে এটি ছোট।

অচিন্ত্যনগর কারখানার শ্রমিক আজিজুর রহমান বলেন, কার্বন তৈরির কারখানা স্থাপিত হওয়ায় গ্রামের যুবকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। তিনি মাসে আট হাজার টাকা মজুরি পান।

ফুরসুন্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ নিজামুল গনি বলেন, তার ইউনিয়নে দুটি কার্বন তৈরির কারখানা স্থাপিত হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ