ঢাকা ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০১৭
শিপলু জামান ,বারবাজার (ঝিনাইদহ)॥ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও যথাযত ব্যবস্থা নিলেই ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের নলডাঙ্গা মন্দিরগুলোই হতে পারে বাংলাদেশের অন্যতম ট্যুরিস্ট স্পট। প্রায় ৫শ বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে পারবে সারা দেশের মানুষ এমনই দাবি দর্শনার্থী ও এলাকাবাসীর। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রায় ৫শ বছর আগে এই রাজবংশের আদি পুরুষ ভট্টরায়ন এর এক উত্তরসুরী বিঞ্চুদাস হাজরা নলডাঙ্গার রাজ বংশপ্রতিষ্ঠা করেন। বৃদ্ধ বয়সে বিঞ্চুদাস ধর্মের প্রতি বিশেষ অনুরাগী হয়ে সন্যাসী হন এবং বেগবতী নদীর তীরে এক জঙ্গলে তপস্যা শুরু করেন। ১৫৯০ সালে মোঘল সুবেদার মানসিংহ বঙ্গ বিজয়ের পর নৌকাযোগে বেগবতী নদী দিয়ে রাজধানী রাজমহলে যাচ্ছিলেন। তার সৈন্যরা পথিমধ্যে রসদ সংগ্রহের জন্য অনুসন্ধানে বের হয়ে বিঞ্চুদাস সন্যাসীকে তপস্যারত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় বিঞ্চুদাস সৈন্যদের খুব দ্রুত রসদ সংগ্রহ করে দেন। এতে সুবেদার মানসিংহ খুশি হয়ে সন্যাসীকে পার্শ¦তর্বী পাঁচটি গ্রাম দান করে যান। এই গ্রামগুলোর সমন্বয়ে প্রথমে হাজরাহাটি জমিদারী এবং ক্রমান্বয়ে তা নলডাঙ্গা রাজ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন এই এলাকাটি নল নটায় পরিপূর্ণ ছিল তাই স্থানটি নলডাঙ্গা নামেই অভিহিত হয়। এরপর প্রায় তিন শ বছর এ বংশের বিভিন্ন শাসক বিভিন্ন সময়ে এই রাজ বংশের শাসন করেন। এবং বিভিন্ন শাসক বিভিন্ন সময়ে বিলুপ্তপ্রায় মন্দিরগুলো প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ১৮৭০ সালে রাজা ইন্দু ভূষন যা রোগে মারা গেলে তার নাবালক দত্তক পুত্র রাজা বাহাদুর প্রথম ভূষণ দেবরায় রাজ্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন আজকের এই বিলুপ্তপ্রায় কয়েকটি মন্দির যা কালের সাী হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বেগবতী নদীর তীরে। মন্দির সংস্কার কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রশান্ত অধিকারীর সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয়দের ভাষায় এটি নলডাঙ্গা মঠ বা নলডাঙ্গা রাজবাড়ি বলে পরিচিত। কালীগঞ্জ উপজেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে এই প্রাচীন রাজ বাড়ির অবস্থান। বেগবতি নদীর ধারে বহুকাল ধরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কালীমাতা মন্দির, লী মন্দির, গনেশ মন্দির, দূর্গা মন্দির, তারামনি মন্দির, বিঞ্চু মন্দির, রাজেশ্বরী মন্দিরসহ সুদৃশ্য ৭টি মন্দির। প্রশান্ত অধিকারী আরো জানান, স্থানীয় লোকজন নিজেদের টাকায় ১৬৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রী শ্রী সিদ্ধেশরী মায়ের মন্দিরসহ কালীমাতা মন্দির, লীমন্দির, তারা মন্দির, দ্বিতল বিশিষ্ট বিঞ্চু মন্দির, সংস্কার করেন। মন্দির সংস্কার কমিটির সাধারন সম্পাদক শ্রী প্রশান্ত অধিকারী জানায়, মুলত তার ভাই অতুল অধীকারী ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব নিয়ে প্রত্মতত্ত্ব বিভাগ ও ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় দানশীল ব্যক্তিদের প থেকে পাওয়া প্রায় দেড় কাটি টাকা ব্যয়ে রাজার ৪টি মন্দিরগুলো সংস্কার করা হয়েছে। ১টি মন্দির সংস্কার অর্ধেক হয়েছে ২য় তলার কাজ পুরো বাকি। আর বাকি ২টি মন্দির এখনো সংস্কার করা যায়নি। প্রতিদিন দেশ বিদেশ থেকে এই রাজবাড়িতে দেখতে আসেন। মন্দির দেখতে আসা রুপা ঘোষ, তারাপদ বিশ্বাস এবং সুনীল কুমার জানান, এ মন্দিরগুলোই ঝিনাইদহের একটি বিরাট সম্পদ হতে পারে কিন্তু দরকার সরকারের আন্তরিকতা। একটু পৃষ্ঠপোষকতা পেলেই হাজার হাজার মানুষ আসবে দেখতে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভালো তবে দরকার সুষ্ঠ পরিকল্পনা। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার জানান, অতি দ্রুত সরকারী ভাবে নলডাঙ্গা মন্দিরগুলো সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com