কোটচাঁদপুরে সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

প্রকাশিত: ৭:২৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২

কোটচাঁদপুরে সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে। চলতি বছরে এউপজেলায় ২’শ ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে বলছেন কৃষি অফিস। গতবছরের চেয়ে অনেক বেশি ফলন হবে বলছেন কৃষি অফিসার মহাসিন আলী ।
সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে শিশির ভেজা সরিষার হলুদ ফুলের ডগায়। এখানকার উৎপাদিত সবজি, চাল-ডাল সরিষার সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু লাগাতার ধান-পাটসহ উৎপাদিত কৃষিপণ্যের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ঝুঁকছেন লাভজনক ফসল সরিষা চাষের দিকে।
গেল মৌসুমে স্থানীয় বাজারগুলোতে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা চলতি মৌসুমে সরিষা চাষে অধিক আগ্রহী হয়েছেন। বর্তমানে উপজেলার মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুল শোভা পাচ্ছে। মৌমাছিরা সরিষা ক্ষেতে ভিড় করছে মধু সংগ্রহ করতে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
পৌর এলাকার সরিষা চাষী ফিরজ ও ইকরাম বলেন, কম খরচ, কম পরিশ্রম আর কম সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে ৬-৮ মণ হারে সরিষা পাওয়া যাবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ সরিষা চার হাজার টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া মাঠের পর মাঠ। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখর হয়ে উঠেছে মাঠ।
উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের আরো বেশ কয়েক জন সরিষা চাষিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, সরিষা চাষের ফলে পরিবারের তেলের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের খরচ যোগান দিতে পারবেন। এবার সরিষার ভালো ফলনের আশা করছেন তারা।
সরিষা চাষাবাদের ফলে আমন ও বোরো ধানের মাঝে উপরি ফসল পেয়ে তাদের লাভ হয়। পাশাপাশি নিজেদের সংসারে তেলের চাহিদাও পূরণ হয়।
উপজেলা কৃষি সম্পসারন অফিসার হুমায়ূন কবির বলেন, বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গত মৌসুমে সরিষার ব্যাপক চাহিদা ছিলো। এবারও সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে ।
উপজেলা কৃষি অফিসার মহাসীন আলী বলেন, চলতি মৌসুমে ২ শত ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। আগাম জাতের সরিষায় ফুল আসাও শুরু করেছে। তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১’শ ৫০ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে বিনামূল্যে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য অনুষ্ঠানের আরও অনেক কৃষকের মাঝে বিতরন করা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ