ঢাকা ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০২০
ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক:
জেলার একপ্রান্ত থেকে আরেকপ্রান্তে ছুটে চলেছেন কর্মকর্তারা, দিচ্ছেন সাবান-মাস্ক, সেনিটাইজার। সাধারণ মানুষকে লাঠিতে নয়, বুঝিয়ে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। পুলিশ সুপার থেকে থানার এসআই সকলেই ঝাপিয়ে পড়েছেন করোনা মোকাবেলায়। তাদের সহযোগিতা করছেন পুলিশের অন্য সদস্যরা।
পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে কুইক রেসপন্স টিন। যে দলের সদস্যরা সদা প্রস্তুত রয়েছেন যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায়। পুলিশ সদস্য, তাদের পরিবার এমনকি সাধারণ মানুষের সমস্যায় এগিয়ে যাবেন তারা। এছাড়া বিদেশ থেকে আসা তিন হাজারের অধিক মানুষের বাড়িতে গিয়েছেন এই পুলিশ সদস্যরা। যাদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার অনুরোধ জানিয়ে এসেছেন।
পুলিশ সদস্যরা বলছেন, ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান করোনাভাইরাস নিয়ে প্রথম থেকেই সজাগ রয়েছেন। তারই নির্দেশে জেলার সকল পুলিশ তৎপর রয়েছেন। ছুটে বেড়াচ্ছেন মাঠে-ময়দানে। পুলিশ সুপার নিজেও জেলার ৬ টি উপজেলায় ঘুরছেন। গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন। অসহায় মানুষের কথা শুনছেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে গ্রামের মানুষগুলো কিভাবে বেঁচে থাকবেন তার পরামর্শ দিচ্ছেন।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মিলু মিয়া বিশ^াস জানান, মূলত ঝিনাইদহ পুলিশ করোনা নিয়ে কাজ শুরু করে ১০ মার্চ। বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনা করেন। এই দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি পুলিশও কাজ করবে এমনটিই ঘোষনা করেন তিনি। তার এই ঘোষনার পরই পুলিশের অন্য সদস্যরা কাজ শুরু করেন। ১১ মার্চ থেকেই শুরু হয়ে যায় তাদের কর্মকান্ড। প্রথম দিনেই শহরে প্রচারপত্র বিলি করা হয়। পরে এই প্রচারপত্র গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান নিজে সাধারণ মানুষের হাতে প্রচারপত্র তুলে দেন।
মিলু মিয়া বিশ^াস আরো জানান, পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান এরপর মানুষকে ঘরে থাকার ব্যবস্থা করতে কাজ শুরু করেন। গ্রামে গ্রামে গিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে ঘরে থাকার অনুরোধ করেন। তার এই কথায় খুশি হয়ে অনেকে নিজ উদ্যোগে কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। পুলিশ সুপার জেলার সকল পুলিশ সদস্যকে পূর্বেই নির্দেশ দিয়েছেন কাউকে লাঠিতে নয়, বুঝিয়ে ঘরে রাখার কাজটি করতে হবে। এরপরও খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে তাদের নানা পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ। এছাড়া জেলার সকল পুলিশের পক্ষ থেকে সাবান, মাস্ক ও সেনিটাইজার বিতরন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ৭ হাজার পিচ সাবান, ৯ হাজার টি মাস্ক, ৩৫ হাজার প্রচারপত্র ও সেনিটাইজার বিতরণ করেছেন।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে গত মার্চ সামে ঝিনাইদহে এসেছেন ৪০৭৫ জন। এদের বেশির ভাগই নিজেদের লুকিয়ে চলছিল। স্বাস্থ্য বিভাগ এদের সন্ধানে কাজ করছিল। কিন্তু কোয়ারেন্টাইনের ভয়ে অনেকে ধরা দিচ্ছিলেন না। পুলিশ সেই সকল ব্যক্তিদের খুজে বের করেছেন। ৩০ মার্চ পর্যন্ত ৩১৬৫ জনকে তারা খুজে পেয়েছেন। যাদের সকলেই বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছেন। ওই সকল ব্যক্তিদের পরিবারগুলোও কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য বলা হয়েছে। পুলিশ সুপার নিজেও বেশ কয়েকজনের বাড়িতে গেছেন, বাকিগুলো পুলিশ সদস্যরা গিয়ে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করেছেন। যে ক’জনকে খূজে পাওয়া যাচ্ছে না তারা ভল ঠিকানা দিয়েছেন বলে তারা মনে করছেন। অবশ্য এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে খোজ-খবর নেওয়া অব্যহত রয়েছে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা আক্রাম হোসেন জানান, তারা প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। তারপরও দরিদ্র দেশে অনেকে আছেন বাধ্য হচ্ছেন বাইরে যেতে। তাদের ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যরা এখন পর্যন্ত ভালো ভুমিকা রেখেছেন। অনেক স্থানে বুঝিয়ে আবার অনেক স্থানে ভয় দেখিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছেন। খেটে খাওয়া মানুষগুলো জরুরী প্রয়োজন মেটাতে পারে সে ব্যবস্থাও তারা রেখেছেন। তিনি জানান, অনেক জেলায় পুলিশের লাঠিপেটার খবর মিডিয়াতে আসছে, কিন্তু ঝিনাইদহ জেলা এখনও তেমন কোনো খারাপ খবর পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান জানান, করোনা মোকাবেলায় তারা অনান্য বিভাগের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছেন। গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। অসহায় মানুষের মাঝে সাবান, মাস্ক, সেনিটাইজার বিতরন করছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি তারাও কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছেন। সার্বিক ভাবে তারা এই জেলার মানুষের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছেন। তারা সবচে বেশি ভুমিকা রাখছেন সবাইকে ঘরে রাখার। এ জন্য লাঠিতে নয় বুঝিয়ে সবাইকে ঘরে রাখতে কাজ করছে পুলিশ।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com