নবগঙ্গা নদীর বুকে ধোপাঘাটা ব্রিজ নির্মিত হয় ১৯৩৬ সালে। ধোপা পেশাই নিয়েজিত কিছু লোক এই ব্রিজের সন্নিকটে নবগঙ্গা নদীর ঘাটে প্রতিনিয়ত কাপড় পরিস্কার করতো। বিরাট বিরাট কাঠের পাটাতনের উপর ধোপারা শব্দ করে কাপড় কাচতো। ধোপাদের ঘাট হতেই এই স্থানের নাম হয়েছে ধোপাঘাটা । এখানে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয়েছিল একটা কংক্রিটের ব্রিজ, সেটা এখনো বিদ্যমান। ধোপাঘাটা ব্রিজ নির্মানকে কেন্দ্র করে লোকোমুখে একাধিক গল্প প্রচলিত আছে। যদিও ঐতিহাসিকদের কাছে এ সব গল্পের কোনো মূল্যায়ন নাই। তবে স্থানীয় লোকেরা এখনো সত্য বলে বিশ্বাস করে এই সব গল্পকাহিনী।
ব্রিজ নির্মানের প্রাথমিক প্রর্যায়ে একজন ডুবুরিকে নামানো হয়েছিল নদীর তলদেশে গভীর পানিতে। ডুবুরি পানির তলদেশে যায় এবং একটি বড় আকারের একটা ‘পান’ হাতে করে ওপরে উঠে আসে। কোনো এক দেবতা পানটি ডুবুরিকে দেয় এবং সেই জাইগায় ব্রিজ নির্মান করতে নিষেধ করে। ডুবুরিকে দেবতা বলেছিল যে এই জাইগায় সে নিজে (দেবতা) বাস করছে। এ কথা যেন কাওকে না বলা হয়, কিন্তু কৌতুহলী লোকের জনের চাপে পড়ে ডুবুরি, ঘটনাটা ফাঁস করে দেয় । এর ফলে সঙ্গে সঙ্গে গলা দিয়ে রক্ত উঠে মারা যায় ডুবুরি। এ ঘটনার পর সেই জাইগা থেকে কিছুটা উত্তর দিকে সরিয়ে ব্রিজটি নির্মান করা হয়। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে ব্রিজটি প্রথমে যেখানে নির্মান করা হয়েছিল সেখানে পানির স্রোতের প্রচন্ড চাপ ছিল।
এ কারনে ব্রিজ প্রথমে ভেঙ্গে যায়। এই ব্রিজ নির্মানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বার্ড এন্ড কোং সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার এসে ব্রিজের উপর থেকে একটি কলাগাছের ভ্যালা ফেলে দেয় এবং কলাগাছের ভ্যালাটি ভাসতে ভাসতে কিছু দুর গিয়ে আবার ফিরে আসতে থাকে। তখন তিনি পানির চাপ কমানোর জন্য ব্রিজের পাশ দিয়ে খাল কাটার নির্দেশ দেন, ব্রিজের পাস দিয়ে খাল কেটে পানি দক্ষিন দিকে প্রবাহের ব্যবস্থা করেন তিনি এবং ব্রিজের নিচে কংক্রিট করে দেওয়া হয়, যাতে ব্রিজটি টিকে থাকে।যার ফলে ব্রিজটি আর ভাঙ্গেনি । এ কারনে ধোপাঘাটা ব্রিজটি কিছুদুর উত্তরে সরিয়ে নির্মান করা হয়েছিল।