ঢাকা ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০১৯
নয়ন খন্দকার, কালীগঞ্জ :
যশোরের যশ, খেজুরের রস। আর যশোর জেলার পাশে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অবস্থিত হওয়ায় এখানকার কাঁচা খেজুর রসের ঘ্রাণে উৎপাদন হওয়া গুড় প্রসিদ্ধ হয়ে উঠেছে। যার কারনে কালীগঞ্জে বসে খেজুর রসের বিশাল এক গুড়ের হাট।
প্রতি বছর শীত মৌসুমের সোম ও শুক্রবার প্রচুর খেজুরের গুড় ও পাটালী উঠে এ হাটে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গাছিরা (কৃষকরা) তাদের উৎপাদিত খেজুর গুড় ও পাটালি বাজারে বিক্রির জন্য আনেন। বাইরের মোকামীদের কাছে কালীগঞ্জের গুড়ের হাট ব্যাপকভাবে পরিচিত হয়েছে।
কালীগঞ্জের হাটে মোকাম করতে আসা কুষ্টিয়ার শালদহ গ্রামের মহির উদ্দীন, মোতালেব মিয়াসহ একাধিক ব্যবসায়ী জানান, কালীগঞ্জের খেজুর রসের গুড় ব্যাপকভাবে প্রসিদ্ধ। এখানকার গুড়ে তাজা রসের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। বাজারে এ গুড়ের অনেক চাহিদা রয়েছে। তাই আমরা প্রতি সোম ও শুক্রবার কালীগঞ্জে মোকাম করতে আসি।
মোতালেব মিয়া আরো জানান, তিনি ৪৫ বছর ধরে গুড়ের ব্যবসার সাথে জাড়িত। প্রতি বছরই তিনি কালীগঞ্জের হাটে গুড় কিনতে আসেন। ৮ থেকে ৯ কেজি ওজনের এক ঠিলে (হাড়ি) গুড় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় ক্রয় করেন। এখান থেকে গুড় কিনে তিনি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে কুষ্টিয়া শহরে পাইকারী ও খুচরামূল্যে তা বিক্রি করে থাকেন।
ব্যবসায়ী মহির উদ্দীন বলেন, তিনি ৩৫ বছর ধরে গুড়ের ব্যবসা করছেন। বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের মধ্যে সাতমাইল, বারবাজার, ডাকবাংলা ও কালীগঞ্জে খেজুর রসের বড় গুড়ের হাট বসে। এরমধ্যে কালীগঞ্জের খেজুর গুড় ব্যাপক ভাবে প্রসিদ্ধ। এখন কালীগঞ্জ ছাড়া অন্যান্য স্থানে তেমনভাবে খেজুর গুড় উঠে না। কালীগঞ্জের মোকামটি এখনও বড়। তাই প্রতি শুক্রবার তিনি এখানে গুড় কিনতে আসেন।
যশোরের বাঘারপাড়া থেকে গুড় কিনতে আসা ব্যবসায়ী সঞ্জিব কুমার কুন্ড বলেন, কালীগঞ্জের হাটে চট্রগ্রাম, বরিশাল, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহর থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা গুড় কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করে থাকেন। তবে দিন দিন খেজুর গুড়ের হাট হারিয়ে যাচ্ছে। এখনকার হাটে আগের মত গুড় উঠছে না। যার কারনে দুর-দুরাত্বের মোকামীরা এখন আর আগের মত আসেন না। তিনি শুক্রবার হাটে ১০৮ ঠিলে (হাড়ি) কিনেছেন।
কালীগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা তোবারক আলী ম-ল জানান, বিভিন্ন স্থান থেকে হাটে আসা মোকামীদের তিনি গুড় কিনে দেন। বড় বড় মোকামীরা ঠিলে (মাটির হাড়ি) থেকে গুড় ঢেলে ড্রামে ভরে নিয়ে যান। ট্রাক, ভ্যান, আলমসাধুসহ বিভিন্ন যানবাহনে এসব গুড় চলে যাচ্ছে কুষ্টিয়া, বাঘারপাড়া, ভাঙ্গা, ফরিদপুরসহ দেশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলা শহরে।
কালীগঞ্জ গুড় হাটা মালিক আতিয়ার রহমান জানান, কালীগঞ্জের খেজুর রসের গুড় ব্যাপকভাবে প্রসিদ্ধ। এ গুড়ে কাঁচা রসের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। তাই ব্যবসায়ীদের কাছে আমাদের এলাকার গুড়ের অনেক সুনাম রয়েছে। তাছাড়া শীত মৌসুমে গুড় দিয়ে অনেক পিঠা তৈরি করা হয়। শীতে ক্রয় করা গুড় ব্যবসায়ীরা সারা বছর জুড়ে তা বিক্রি করে থাকেন।
তিনি আরো বলেন, ইটভাটা মালিকরা খেজুর গাছ ক্রয় করে পুড়িয়ে ফেলছেন। আবার অনেক গাছিরা গাছ টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাই এখন আর আগের মত হাটে গুড় আসছে না। তবে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের মধ্যে কালীগঞ্জের খেজুর গুড়ের হাট এখনো টিকে আছে। এ গুড়ের হাট কালীগঞ্জের একটি ঐতিহ্য বলে তিনি জানান।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com