ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক :
ঝিনাইদহে চুরির অভিযোগে রানা নামের এক যুবককে গাছে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের একটি ভিডিও থেকে নির্যাতনরে ঘটনা জানাজানি হয়। অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক দু’দিন আগে ২৮ ডিসেম্বর জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। এ ঘটনায় এখনও থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
রানা হরিণাকুন্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের কৃষক ওমর আলী ছেলে। ঘটনার দিন স্থানীয় আওয়ামীগ নেতা শাহিনুর রহমান তুহিনের নেতৃত্বে রানার উপর এ নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনকারী শাহিনুর রহমান তুহিন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক।
তাহেরহুদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মনজের আলী জানান, ভোটের দু’দিন আগে ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে মাঠে কাজ করছিল রানা। এসময় শাহিনুর রহমান তুহিন নামের এই আওয়ামীলীগ নেতা টেলিভিশন চুরির অভিযোগে রানাকে ধরে নিয়ে আসে। এরপর গ্রামের একটি গাছে ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়ে নির্যাতন করে। ঘটনার দিন আমি এলাকায় ছিলাম না।
স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি আরো জানান, নির্যাতনের পর পরিবারের সদস্যরা মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে কুষ্টিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। নির্যাতনের সিকার রানা বিএনপির সমর্থক বলেও জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান।
অভিযুক্ত শাহিনুর রহমান তুহিন জানান, ভোটের ৫ দিন আগে নির্বাচনী ক্যাম্পের টিভি চুরি হয়ে যায়। এসময় আমরা জানতে পারি রানা টিভি চুরি করেছে। কিন্তু উদ্ধার না হওয়ায় আমি তাকে সামান্য মেরেছিলাম। তাকে আমি চিকিৎসাও করিয়েছিলাম। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিষয়টা ভিন্নভাবে তুলে ধরে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি আরো বলেন, রানা বিএনপির দুর্ধর্ষ ক্যাডার ছিল। এছাড়া পেশাদার চোর বলে সবাই তাকে চেনে। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলাও আছে বলেন জানান অভিযুক্ত আওয়ামীলীগের এই নেতা তুহিন।
রানার পিতা ওমর আলী জানান, আমার ছেলে কোন চুরির সাথে জড়িত না। তাকে অন্যায় ভাবে মারা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
এঘটনায় হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, ভোটের কয়েকদিন আগে স্থানীয় আওয়ামলীগ নেতা তুহিন রানা নামের এই ব্যাক্তিকে ধরে থানায় এনেছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অফিস থেকে টেলিভিশন চুরি করেছে।
সে সময় আমরা তাকে টেলিভিশন উদ্ধারের জন্য চেষ্টাও করেছিলাম কিন্তু না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের জিম্মায় তাকে ফেরত দেওয়া হয়। এরপর কি হয়েছে আমার জানা ছিল না। তবে সাংবাদিকদের কাছ থেকে নির্যাতনের ঘটনা জানার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর সঠিক ঘটনা জানা যাবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।