ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কুমার নদে ফেলা হচ্ছে ক্লিনিকের বর্জ্য : স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে মানুষ

প্রকাশিত: ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৫, ২০১৭

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কুমার নদে ফেলা হচ্ছে ক্লিনিকের বর্জ্য : স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে মানুষ

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কুমার নদের পানি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। শহরের ৬টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিষাক্ত বস্তা বস্তা বর্জ্য প্রতিনিয়ত কুমার নদে ফেলা হচ্ছে। এতে ক্যান্সার, হেপাটাইটিস বি, টিটিনাসসহ চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শৈলকুপা শহরের কবিরপুরে ৬টি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিক, প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিষাক্ত বর্জ্য বিশেষ করে অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহৃত ব্লেড, সূচ, সিরিঞ্জ, রক্তমাখা তুলা-বস্ত্র, শরীরের অপসারিত অংশ, অব্যবহৃত ওষুধ, ময়লা-আবর্জনাসহ চিকিৎসায় ব্যবহৃত নানা সামগ্রী কুমার নদের পুরাতন ব্রিজ ও আশপাশের এলাকা থেকে নিচে ফেলা হয়।

প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে ক্লিনিকগুলোর আয়া-কর্মচারীরা এগুলো বস্তায় করে নিয়ে এসে নদীতে ফেলে দেয়। নদীর নীচে স্তূপাকারে জমে থাকতে দেখা গেছে এসব বর্জ্য। পরবর্তীতে স্রোতে তা ছড়িয়ে যাচ্ছে অন্য এলাকায়। ফলে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন তীরবর্তী মানুষেরা। কারণ ঘর-গৃহস্থালী, গোসলসহ নিত্য কাজের জন্য তারা নদীর পানির উপর নির্ভরশীল। পানি দূষিত হওয়ায় মাছসহ নানা জলজ প্রাণীও আক্রান্ত হচ্ছে।

Jhenidah

কুমার নদের ভাটি অঞ্চল বিজুলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী লক্ষীকান্ত গড়াই জানান, ক্লিনিকের বর্জ্য বিভিন্ন সময়ে তাদের ঘাট এলাকায় দেখা যায়। গোসল করতে নামলে সূঁচ, সিরিঞ্জ, ব্লেডে ক্ষতের সৃষ্টি হয় শিশু-কিশোরদের।

এ ব্যাপারে শৈলকুপার খন্দকার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মালিক ফজলুর রহমান মাস্টার বলেন, আমাদের প্রতি উপরের নির্দেশ আছে এসব ক্লিনিক বর্জ্য আগুনে পুড়িয়ে ফেলার, আমরা তা করারা চেষ্টা করি। তবে অন্য অনেকেই নদীতে এসব বর্জ্য ফেলে। অসাবধানতায় কখনও কখনও নিজেদের ক্লিনিকের বর্জ্যও ফেলা হতে পারে বলে স্বীকার করেন তিনি।

তবে তার অভিযোগ শুধু ক্লিনিক নয়, হাট-বাজার ও পৌরসভার বর্জ্যও নদীতে ফেলা হয়। এসব বন্ধ করতে হলে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে, শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খন্দকার বাবর জানান, ক্লিনিকগুলোর পরিত্যক্ত বর্জ্য মানবদেহের জন্য খুবই বিষাক্ত ও ক্ষতিকর।

তিনি বলেন, এসব বর্জ্য খোলা স্থান, নদী বা পাবলিক প্লেসে ফেললে তা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে। বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি, ক্যান্সার, টিটেনাস, চর্মরোগসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকে। এ কারণে ক্লিনিকগুলোকে নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলে তা পুড়িয়ে ফেলতে অনেকবার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ