সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে বালির পরিবর্তে মাটির ব্যবহার

প্রকাশিত: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০১৭

এডিপিভুক্ত ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে মেহেরপুর জেলার আঞ্চলিক মহাসড়কে। যে ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এ কাজ করছে সেগুলো হল- আরএবি-আরসি প্রাইভেট লিমিটেড, রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড ও জহিরুল লিমিটেড (জেভি)। সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় চলতি ২০১৭ সালের গত ৫ জুন। এ কাজ শেষ হবে ২০১৮ সালের ৪ জুন। সড়কের কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩ কোটি ৪৭ লাখ ৫৮ হাজার ২০৫ টাকা। প্রকল্প সংশোধিত ডিপিপি ২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর একনেকে অনুমোদিত হয়। আর প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে সড়কের এ কাজ চলছে। এ কাজের তদারকি করছেন মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের এসডি তানভির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই কাজের দেখাশোনা করতে হয় আমাকে। বিষয়টি হল-বৃষ্টির পানিতে ভিজলে বালির রঙ পরিবর্তন হয়ে অনেকটা মাটির মতো মনে হয়।’ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের মধ্য রয়েছে সড়কের দুই পাশ তিন ফুট করে প্রশস্তকরণ, ড্রেন নির্মাণ, কালভার্ট নির্মাণ, সাইন সিগন্যাল, কিলোমিটার পোস্ট ও হার্ড সোলডারসহ অন্য কাজ। সড়কের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার যেভাবে বলছে সেভাবে তারা কাজ করছে। বালি না মাটি দিয়ে কাজ হচ্ছে, তা তাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। জহিরুল লিমিটেডের (জেভি) স্বত্বাধিকারী জহিরুল ইসলামের ব্যবহূত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার সড়ক নির্মাণ কাজের অনিয়মের বিষয় জানতে কল দেওয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ কাজে বালির পরিবর্তে মাটি মিশ্রিত নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার অনিয়মের কারণে সরকারের কোটি কোটি টাকা পানিতে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সাফাই গাইছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। জনসাধারণ ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন এভাবে সড়ক নির্মাণ করলে অল্প দিনেই নষ্ট হয়ে যাবে। রাস্তার একপাশে মাটি কাটা ও অন্য পাশে মাটি মিশ্রিত নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে ভরাট করে রোলিংয়ের কাজ চলছে। মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের মেহেরপুর জেলার সীমানা পর্যন্ত সাড়ে ২২ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণসহ বিভিন্ন কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭৩ কোটি টাকা। কাজের ধরন, নির্মাণ উপকরণ ও টাকার পরিমাণ সম্পর্কিত কোনো সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি। মেহেরপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণসহ অন্য কাজ দ্রুত করছে ৩টি যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তার এক পাশে দুটি মাটিকাটা মেশিন দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে। আর অন্য পাশে ৩৫ থেকে ৪০ জন শ্রমিক মাটি মিশ্রিত খোয়া দিয়ে রাস্তার সমান ভরাট করছে। এরপর তার ওপর রোলার দিয়ে রোলিং করা হচ্ছে। ভরাটের কাজ চলছে মেহেরপুর সদরের রাজনগর এলাকায়। মাটি মিশ্রিত ইটের খোয়া অন্য জায়গায় মিশিয়ে তা পাওয়ার টিলার যোগে এনে সড়কের পাশে রাখা হচ্ছে। এরপর তা ব্যবহার করা হচ্ছে সড়কের কাজে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ