ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মঙ্গলপৈতা বাজারের আশপাশের গ্রামগুলোতে কয়েকটি বাড়িতে গড়ে উঠেছে নকল আজিজ বিড়ি তৈরীর ছোট ছোট কারখানা।
এর আগে ভ্রাম্যমান আদালত কয়েকবার এসব নকল বিড়ির কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিড়ি তৈরীর সরঞ্জাম ও কয়েক লক্ষ টাকার নকল বিড়ি উদ্ধার করে ধ্বংস ও জরিমানা করেন। নকল বিড়ি তৈরী কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু করে নকল বিড়ি তৈরী ও বেচাকেনা।
শুক্রবার এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এক সংবাদ কর্মিকে হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন, নকল বিড়ি তৈরী কারখানার মালিক ও বিড়ি ব্যবসায়ী দেবরাজপুর গ্রামের আমির হোসেন মোল্যা। সে উচ্চ স্বরে জনসমূখে বলে তুমি আমাদের কিছুই করতে পারবে না কারণ আমরা নিয়মিত পুলিশ, ওসি, দারোগা ও স্থানীয় নেতাদের টাকা দিয়ে ব্যবসা করি। পরবর্তিতে ঐ নকল বিড়ি ব্যবসায়ী কালীগঞ্জ থানায় এসে পুলিশের নিকট ঐ সংবাদ কর্মির নামে মিথ্যা মৌখিক অভিযোগ করে যে, সাংবাদিক আমাদের সাথে খুব খারাপ আচারন করেছে আপনি এর বিচার করেন।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মঙ্গলপৈতা বাজারের আশপাশের গ্রামের কিছু বাড়িতে ছোট ছোট নকল বিড়ি তৈরীর কারখানা গড়ে তুলে তারা এ ব্যবসা করে আসছে। এরা নাকি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ ব্যবসা করে।
এসব ব্যবসায়ীদের নাম হলো, দেবরাজপুর গ্রামের শাহাজাহানের ছেলে আমির মোল্যা, একই গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে শাহাজাহান, মোজাম্মেল মন্ডলের ছেলে মোঃ বকুল, মৃত আফসার শেখের ছেলে তোহাজ্জত শেখ, আমির শেখের ছেলে ইলিয়াস শেখ, আফসার শেখের ছেলে রওশন শেখ, মৃত শাহাদৎ মোল্যার ছেলে মুজিদ মোল্যা, লিয়াকত খার স্ত্রী অনজুরা বেগম, আসলাম, আকিদুলসহ অনেকে।
উল্লেখ, গত (১৬ জুন, ২০১৬) তারিখে নকল বিড়ি তৈরীর কারখানায় অভিযান চালিয়ে নকল বিড়ি তৈরী ও মজুদ রাখার অভিযোগে কালীগঞ্জ উপজেলার দেবরাজপুর গ্রামের আসলাম হোসেন ও আকিদুল ইসলাম নামের ২ ব্যক্তির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও জরিমানা দিয়েছিল ভ্রাম্যমান আদালত।
সে সময় ৬০ কোটি বিড়ি তৈরীর উপকরণ ও ৫ লক্ষাধিক টাকার নকল ব্যান্ডরোলসহ আসলাম হোসেন ও আকিদুল ইসলাম নামের দুই জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে আসলাম হোসেকে ৬ মাসের কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং আকিদুল ইসলামকে ২ মাসের কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেয়। পরে উদ্ধারকৃত নকল বিড়ির উপকরণ পুড়িয়ে ধ্বংস করে। পরে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার আগের মত ব্যবসা শুরু করে। দেবরাজপুর গ্রামের শাহাজাহান আলী বিগত ৩৫ বৎসর ধরে এই নকল আজিজ বিড়ি তৈরী করে আসছে। রংপুর ও বগুড়া থেকে নকল আজিজ বিড়ি তৈরীর সমস্থ সরঞ্জাম ক্রয় করে আনে।
এই অবৈধ ব্যবসার কারনে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আসল আজিজ বিড়ির মালিক অর্থিক দিক দিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক যুবক জানান, এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে ওয়ার্ড মেম্বার আশরাফুর, সে প্রতি সপ্তাহে থানা পুলিশ প্রশাসন, নেতাদের নাম করে ৮ হাজার টাকা নকল বিড়ি কারখানার মালিকদের কাছ থেকে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বর আশরাফুল জানান, গ্রামের গরীব মানুষ ভাই ভাগার এ ব্যবসা করে আমি তাদের প্রতিনিধি হিসাবে একটু সহযোগীতা করি প্রশাসন ও নেতাদের ম্যানেজ করি এরা এলাকার একদম গরীব এটা নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। প্রশাসন দ্রুত এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করার ব্যবস্থা করবেন এমনটাই আশা করেন এলাকার সাধারন মানুষ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মিজানুর রহমান খান বলেন, আমি এ থানায় নতুন আসছি তাই কারা কোথায় নকল বিড়ির কারখানা করে জানা নেই। আপনারা তাদের নামের তালিকা দেবেন তাহলে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।