আহমেদ নাসিম আনসারী
ঝিনাইদহে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। ৬টি উপজেলা হরিণাকুন্ড, শৈলক’পা, মহেশপুর, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও সদরে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হওয়ায় নেই পাট পচানোর জায়গার কোন অভাব। কিন্তু কৃষকের অভিযোগ, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বাম্পার ফলন দিলেও আমরা ন্যায্য দাম পাই না।
মহেশপুরের নাটিমা কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, আমাদের এলাকায় সোনালী আঁশের খুব ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে মিলছে না ভাল দাম। বাজারে বর্তমানে ১৫০০-১৬০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হচ্ছে।
শৈলক’পার আবাইপুর গ্রামের কৃষক লাল মিয়া জানান, কৃষক তো ছাড় দিতে দিতে শেষ হয়ে গেল। একদিকে বাজানে সব জিনিষের দাম আকাশচুম্বী, অন্যদিকে আমাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম নেই। আমরা কীভাবে বাঁচবো?
সদরের চুটলিয়া গ্রামের মানিক বিশ্বাস জানান, একদিকে সরকারী চাকুরীজীবীদের বেতন বাড়ছে আর অন্যদিকে আমাদের আয় কমছে। বর্তমানে এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে রকমভেদে ১৩ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। সেখানে বেশীর ভাগ চাষীর ক্ষেতেই রকমভেদে ১০ থেকে ১৬ ফুট লম্বা পাট হয়েছে। তবে আল্লার রহমতে এবার পানি নিয়ে কোন ভাবনা নেই। জাগ দিতে অনেক দূওে যেতে হচ্ছে না। তাই খরচও একটু কমেচে।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেছে, চলছে পাটের ভরা মৌসুম। তাইতো পাট কাটা, পচানো, আশ ছাড়ানো আর ঘরে তোলার কাজে বেশী সময় ব্যয় হচ্ছে ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকার পাট চাষীদের। চাষীরা বলছেন, মাঠে পাটের অবস্থা খুব ভাল। তবে কামলার দাম টা একটু বেশী দিতে হচ্ছে।
ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার জেলায় পাটের আবাদ হয়েছে ২৪ হাজার ৩ শ’ ৭ হেক্টর জমিতে, আর মোট পাট উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার মেট্রিকটন।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ড. খান মো: মনিরুজ্জামান জানান, পাটের বহুমুখী ব্যবহার বাড়ানো গেলে দেশে পাট উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। পাট চাষের জন্য প্রয়োজন পরিবর্তনশীল আবহাওয়া অর্থাৎ কখনও বৃষ্টি আবার কখনও রোদ। এ মৌসুমে আবহাওয়া ছিল অনুকুল তাইতো পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে।