আহমেদ নাসিম আনসারী
ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলার হাজারো পরিবার কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করেছে। খামরীদের অভিযোগ, গত ৬ মাসে সবধরনের গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুন বেড়েছে। তাদের দাবী ঈদকে সামনে রেখে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে গরু না আসলেই লাভের আশা করা যায়। কিন্তু প্রতিবছরই দেখা যায়, একেবারে শেষ মুহূর্তে সীমান্ত দিয়ে ব্যাপকভাবে কোরবানী গরু আসতে থাকে। তবে এ ব্যাপারে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহের গরু খামারীরা।
ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের বেজপাড়া গ্রমের গরু খামারী আহসানুল হক টিপু জানান, কোরবানী ঈদ আসন্ন। বাড়তি লাভের আশায় এবারের ঈদকে সামনে রেখে ঝিনাইদহের হাজারো গরু খামারী পশু লালন-পালন করেছে। তবে তাদের মনে অজানা আতঙ্কও কাজ করছে। যদি শেষ সময়ে সীমান্ত দিয়ে বরাবরের ন্যায় ভারতীয় গরু ব্যাপকহারে আসতে থাকে তবে চরম লোকসানের মুখ দেখবে এসব গরু খামারীরা। কারণ এ বছর গো-খাদ্য যেমন খড় , ছোলা, ঘাস, ভুসি এবং ঔষুধের দাম আকাশ চড়া। সে হিসাবে গরু লালন-পালন খরচও বেড়েছে আগের তুলনায়।
তিনি আরও জানান, ঝিনাইদহের গরু খামারীরা ক্ষতিকারক মোটাতাজাকরন ইনজেকশান ছাড়া দেশীয় বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে গরু মোটা তাজা করে থাকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলা কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, হরিণাকুন্ড, শৈলক’পা ও সদরে বিভিন্ন গ্রামে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দেশী গরুসহ বিভিন্ন উন্নত জাত যেমন ভারতীয় হরিয়ানা ও নেপালী জাতের গরু পালন। প্রায় ৩০ হাাজরেরও বেশী পরিবার জেলাতে গরু পালন করে হচ্ছেন স্বাবলম্বী, দেখেছেন সফলতার মুখ। লাভ জনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে গরু পালনকারীর সংখ্যা।
হরিণাকুন্ড উপজেলার সবচেয়ে বড় গরু খামারী আদিল উদ্দিন জোয়ার্দ্ধার জানান, গরু পালন করে একদিকে যেমন নিজে লাভবান হচ্ছেন অন্যদিকে কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন । ভারত থেকে গরু আসলে তারা নিঃস্ব হয়ে যাবেন।
তিনি আরও জানান, এ সব গরু কোরবানীর সময় ঢাকা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করা হয়। মোটাতাজাকরনের ভ্যাকসিন ছাড়া শুধুমাত্র দেশিয় খাবার খড়, ছোলা, ভুষির মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরন করা হয়।
ঝিনাইদহ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাফিজুর রহমান জানান, গরু লালন-পালনে একদিকে যেমন মাংশের চাহিদা পুরন হচ্ছে অন্যদিকে গোবর দিয়ে বায়োগ্যাস তৈরী করে রান্নাসহ অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে পারছে খামারীরা । আবার পরে ঐ বিষ্টা জমিতে সার হিসাবে ব্যবহার করতে পারছে ।
তিনি আরও জানান, এবার কুরবানী ঈদের জন্য জেলায় ৫১,৮৯৬ টা গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে ।