ঢাকা ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৩
ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক:
উন্নত জীবনের আশায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ ও স্বল্পোন্নত অনেক দেশ থেকে প্রতি বছর হাজারো মানুষ ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান।
এই বিদেশে যেতে যেয়ে অনেকে পড়েন বিপাকে, আবার কেউবা বিদেশের মাটিতে পৌছালেও কর্মসংস্থানের অভাবে ফিরতে হয় দেশের মাটিতে। আবার কেউবা টাকা দিয়েও বছরের পর বছর ঘুরতে থাকে বিভিন্ন রিক্রটিং এজেন্সির দালালের পিছনে। অনেক সময় বিদেশ যেতে ইচ্ছুক অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান দালাল রা। তবে ভিন্ন ঘটনা ঘঠেছে ঝিনাইদহে।
২০১৪ সালে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৫ নং কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের রাধাকান্তপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ নাসির উদ্দিন ১৫ জন লোক মালয়েশিয়াতে নিতে চাইলে। সে সময় নাসির উদ্দিনের পিতা মুক্তিযোদ্ধা লতা জর্দ্দার ও ছোট ভাই হৃদয়ের কাছে পাসপোর্ট এবং টাকা জমা দেন বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা। তার মধ্যে রাধাকান্তপুরের টুলু জর্দ্দার (৫০ হাজার), সুলতান জর্দ্দার (৫০ হাজার), দ্বারিয়াপুর গ্রামের চাদ আলি ও কুদ্দস আলী (২ লক্ষ ৬৫ হাজার), এবং আব্দালপুর গ্রামের বেলজার আলী (১৬ হাজার)। এছাড়াও হরিনাকুন্ডু উপজেলার গনজের আলী (১ লক্ষ ৯০ হাজার), জহুরুল ইসলাম (১ লক্ষ ২৫ হাজার), হারুন আর রশীদ (১ লক্ষ টাকা) সহ মোট ১৫ জনের কাছ প্রায় ২০ লক্ষ টাকা নেন মালয়েশিয়া প্রবাসী নাসির উদ্দিন। পরবর্তিতে ৩ জনকে বিদেশ নিতে পারলেও, বাকি ১২ জনকে বিদেশ নিতে না পারায় সকলে টাকা ফেরৎ পাবার জন্য চাপাচাপি করলে বাড়ী ছাড়তে বাধ্য হন লতা জর্দ্দার ও তার পরিবার।
সে সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় টুলু জর্দ্দার ও তার পিতা মোঃ আজিম আলী বাড়ী লুটপাট এবং বাগানের প্রায় ৪ শতাধিক ছোট বড় আম, কাঠাল মেহগনি গাছ কেটে নেয় (যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা) । খবর পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসলে লতা জর্দ্দার ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয় আজিম ও তার সহযোগিরা।
পরবর্তিতে পাওনাদার রা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দিলে, পাওনা টাকা পরিশোধ করার জন্য ৩ বিঘা জমি বিক্রয় করে স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফ আলী ও পুলিশ প্রশাসনের এর উপস্থিতিতে সকল মানুষের পাওনা টাকা পরিশোধ করে পরিবারটি।
আজিমের পাওনা টাকা পরিশোধের আপোষ নামা!
আজিমের টাকা পরিশোধ করার পরেও স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তির সহায়তায় আজিম আলী পুনরায় পরিবারটির বিরুদ্ধে ২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার একটি মিথ্য মামলা করে বসেন কোর্টে। (পুলিশ ব্যুরো অব ইনেভেস্টিগেশন) পিবিআই মামলাটির তদন্ত শেষে কোর্টে চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিলে, সেখানে দেখা যায় আসলেই ২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। যার ফলে মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত।
ঘটনার সতত্যা না পাওয়াতে মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত!
আদালত মামলাটি খারিজ করে দিলেও বসে নেই আজিম গং। বর্তমানে পরিবারটিকে নানাভাবে হেনস্তা ও হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে, যার ফলে লতা জর্দ্দারের নাতি ছেলে ফারহান আনজুম রোহান স্থানীয় রাধাকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়তেও বাধ্য হয়। গ্রাম ছেড়ে শহরে একটি স্কুলে ভর্তি হলে, সেখানেও আজিম ও তার লোকেরা ছেলেটিকে বিভিন্ন ভয় ভিতী দেখিয়ে আসছে বলে জানা যায়।
এ অবস্থায় চরম শঙ্কার মধ্যে জীবনযাপন করছে পরিবারটি, যে কোন সময় তাদের উপর বড় ধরনের হামলা হতে পারে বলে আশংকা করছে পরিবারটির সদস্যরা। এর থেকে মুক্তি পেতে আদালতের দ্বারস্ত হবেন বলে জানান পরিবারটির সদস্যরা।
Design and developed by zahidit.com