ঢাকা ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২১
ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক:
আজ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কামান্না শহীদ দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাক বাহিনী ও রাজাকাররা ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৯ জনকে হত্যা করে। কামান্না গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পের টিনের ঘর দুটি অবিকল সে অবস্থাতে সে দিনের স্মৃতি বহন করছে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধাগন হচ্ছেন, মোমিন, কাদের, শহিদুল, ছলেমান, রাজ্জাক (১ ), ওয়াহেদ, রিয়াত মন্ডল,আলমগীর, মতলেব, আলি হোসন, শরিফুল, আনিছুর, আলিমুজ্জামান, তাজুল, মনিরুজ্জামান, মাছিম, রাজ্জাক (২), কাওছার, সালেক, আজিজ, আকবর, সেলিম, হোসেন, রাশেদ, গোলজার, অধীর ও গৌর। এ সাথে শহীদ হন তাঁদের গাইড ফণি ভুষণ কুন্ডু ও রান্নার বুয়া রঙ্গবিবি।
স্থানীয় ও মুক্তিযোদ্ধারা জানায়, অবস্থানগত দিক দিয়ে সুবিধাজনক হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাগন কামান্না গ্রামের মাধব ভুঁইয়ার বাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্প গড়ে তোলেন। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরেন ৪২ জনের এক দল মুক্তিযোদ্ধা। নভেম্বর মাসের শেষ দিকে এ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন তারা। কামান্না গ্রামের এক পাক বাহিনীর দালালের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবর পৌঁছে যায় ঝিনাইদহ, শৈলকুপা ও মাগুরার পাক সেনা ছাউনিতে। ২৫ নভেম্বর রাতে খাবার খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাগন ঘুমিয়ে পড়েন। এ ঘুম ছিল তাদের জীবনের শেষ ঘুম।
গ্রামবাসিরা জানান, ভোরের আযানের সময় পাক বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকারের দল মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান স্থল চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারা আক্রমণ শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধা গন দিশেহারা হয়ে পড়েন। পাক বাহিনীকে পাল্টা আক্রমণ হানার সুযোগ পান না তাঁরা। বৃষ্টির মত গুলি চালাতে থাকে পাক সেনা ও রাজাকাররা। একে একে শহীদ হন ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। ঘরের ভিতর, উঠানে ও নদীর ধারে মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে। পাক সেনা ও রাজাকারের দল ফিরে যায় তাদের ছাউনীতে। সকালে গ্রামবাসি লাশ গুলো এক স্থানে জড়ো করে। তারপর কুমার নদীর তীরে ৫টি গন কবরে তড়িঘড়ি করে দাফন করে।
দিবসটি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে ওই গ্রামে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে শৈলকুপা ও পাশবর্তী মাগুরা জেলার মুক্তিযোদ্ধারা।
Design and developed by zahidit.com