ঢাকা ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:০৬ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২০
নয়ন খন্দকার, কালীগঞ্জ॥
রিমান্ডে থাকা আসামির স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাজে ব্যবহৃত চাকু ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে যেয়ে আসামি পক্ষের হামলায় ৫ পিবিআই কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। বুধবার রাত ১০ টার দিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হচ্ছেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল হোসেন, এসআই হুমায়ন, এএসআই হাফিজুর রহমান, এএসআই মোঃ জাফর, এএসআই আব্দুল খালেক। ঘটনার সময় এএসআই হাফিজুর রহমানকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারধর করা হয় বলে পিবিআই এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ যেয়ে পিবিআই সদস্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পিবিআই এর উপর হামলাম ঘটনায় থানা পুলিশ হামলাকারী মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও তার ভাই মুশতাক আহম্মেদ লাভলু কে আটক করেছে।
ঝিনাইদহ পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, গত ৩০ নভেম্বর কালীগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র আল-আমিন নিখোঁজ হয়। ডিসেম্বরের ৪ তারিখে ওই মাদ্রাসা ছাত্র আল আমিনের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়।
পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় ঝিনাইদহ পিবিআই এর উপর। হত্যা মামলায় পিবিআই কিছুদিন আগে কালীগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের মুশফিকুর রহমান ডাবলুর ছেলে তারিক হাসান সাব্বির ও আব্দুস সামাদ মিল্টনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত হৃদয় কে গ্রেপ্তার করে। তাদের ২ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই। রিমান্ডে থাকা সাব্বির হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করে এবং হত্যা কাজে ব্যবহৃত চাকু ও যে মোবাইল দিয়ে ম্যাসেজ দেয়া হয়েছিল সে মোবাইল ফোন তাদের বাড়িতে আসে বলে জানায়।
এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই এর এসআই সোহেল হোসেন বুধবার রাত ১০ টার দিকে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে আড়পাড়া গ্রামের মুশফিকুর রহমান ডাবলুর বাড়িতে আলামত উদ্ধারে যান। আলামত উদ্ধার করে গাড়ীতে উঠার সময় আসামি সাব্বিরের পিতা মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও তার চাচা মুশতাক আহম্মেদ লাভলুর নেতৃত্বে ১২/১৩ জন ব্যক্তি পিবিআই সদস্যদের উপর হামলা করে। সে সময় তারা এএসআই সোহেল হোসেনকে আটকে রেখে মারধর করে এবং হত্যাকাজে ব্যবহৃত আলামত ও মামলার ডকেট ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
পরে থানা থেকে পুলিশ যেয়ে পিবিআই সদস্যদের উদ্ধার করে। আহত ৫ কর্মকর্তার মধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোহেল হোসেন ও এএসআই হাফিজুর রহমানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমকে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন আরো জানান, পুলিশের উপর আক্রমন করে আসামি ছিনতাই চেষ্টা এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার আলামত ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
তবে আসামি সাব্বিরের চাচা কালীগঞ্জ পৌর সভার সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু মুঠোফোনে সাংবাদিকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, পিবিআই সারাদিন পুকুর সেঁকে কোন অস্ত্র পায়নি। রাতে রান্না ঘরে এসে ছোট একটি চাকু হাতে দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় একজনকে ধরে রাখি।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মুহাঃ মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, হত্যা মামলার আলামত উদ্ধার করতে এসে আসামি সাাব্বিরের পিতা ডাবলু ও চাচা লাভলুর নেতৃত্বে পিবিআই এর উপর হামলা হয়েছে। এ সময় ৫ পিবিআই সদস্য আহত হয় । তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুশফিকুর রহমান ডাবলু ও মুশতাক আহম্মেদ লাভলুকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। বিস্তারিত পরে জানতে পারবেন।
Design and developed by zahidit.com