কালীগঞ্জ এম ইউ কলেজের বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমানের পূর্ণবহালের আদেশ হাইকোর্টে স্থগিত

প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯

কালীগঞ্জ এম ইউ কলেজের বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমানের পূর্ণবহালের আদেশ হাইকোর্টে স্থগিত

বিশেষ প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ॥ ২০ ডিসেম্বর’২০১৯
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সরকারি এম ইউ (মাহতাব উদ্দীন) কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমানের পূর্ণবহালের আদেশটি হাইকোর্ট স্থগিত ঘোষনা করেছে। ২৬ নভেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট পূনর্বহালের পূর্বের আদেশের বিপরিতে রি-রীট পিটিশন করলে হাইকোর্ট তা স্থগিত ঘোষণা করে। সেই সাথে হাইকোটের রুল অনুসরণ না করায় জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক কে হাইকোর্টে তলব করা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশের কপি স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।

মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, নিয়োগে বানিজ্য, কলেজের অর্থ আতœসাৎ ও ডিজির প্রতিনিধি ছাড়াই নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণসহ ১৫টির অধিক অনিয়মের অভিযোগে ২০১৫ সালে এম ইউ কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাতে অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত হন। যার রেজুলেশনের কপিটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে প্রেরণও করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানের বরখাস্তের সিদ্ধান্তটি অনুমোদন না করে কালক্ষেপন করতে থাকে।
এমতাঅবস্থায় এম ইউ কলেজ পরিচালনা পর্ষদ তার সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশন নং ১০৩২/১৬ দায়ের করে। এরই প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোট গত ১১/০২/১৯ তারিখে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কে একটি নির্দেশনা প্রদান করেন। এরই মধ্যে সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাহবুবার রহমান নানান মিথ্যার আশ্রয়ে বিশ^বিদ্যালয় কলেজ পরিদর্শককে ম্যানেজ করেন এবং জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক ড. মোঃ মনিরুজ্জামান মহামান্য হাইকোর্টের রীট পিটিশন নং ১০৩২/১৬ এর অপব্যাখ্যা করে অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান কে ০৬/০৫/২০১৯ ইং তারিখে পূনর্বহালের জন্য আদেশ দেন। এ আদেশের বিপক্ষে ১২২৬১/২০১৯ নং রি-রীট পিটিশন এর প্রেক্ষিতে গত ২৬ নভেম্বর মহামান্য হাইকোর্ট তার পূর্ণবহালের ওই আদেশটি স্থগিত করেন।
সেই সাথে হাইকোর্টের রায় অনুসরণ না করে কিভাবে অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান কে পূনর্বহালের আদেশ দেওয়া হলো তা জানতে চেয়ে মহামান্য হাইকোর্ট কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ওই কলেজ পরিদর্শককে হাইকোর্টে তলব করেছেন।
উল্লেখ্য, সাময়িক বহিস্কৃত মাহবুবুর রহমান কলেজে চাকুরীকালীন সময়ে নিয়োগে অনিয়ম, ২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে কলেজের আয়-ব্যয় ক্যাশ বহিতে না লিখে আতœসাৎ, যোগদানের আগেই গোপনে পুকুর ইজারা, ডিজির প্রতিনিধি ছাড়াই নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণসহ তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি, যোগদানের আগেই চাকুরীর অনুমোদন ও সভা আহবান ছাড়াই রেজুলেশন করা সহ তার বিরুদ্ধে ১৫ টির অধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
হাইকোর্ট থেকে পূর্ণবহালের আদেশ স্থগিতের বিষয়ে সাময়িক বহিস্কৃত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান জানান, কলেজ সরকারি হওয়ায় পর থেকে বর্তমানে কলেজে কোন কমিটি নাই। তাই যারা রিট করেছেন তাদের রিটটা ভিত্তিহীন। একারনেই হাইকোট স্থগিতের রুলটি ভ্যাকেট করবেন বলে জানান তিনি।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মন্ডল আরো জানান, বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানের সম্প্রতি পূর্ণবহালের আদেশটি মহামান্য হাইকোট স্থগিত ঘোষনা করেছেন। এ সংক্রান্ত রায়ের সকল কপি কলেজ কর্তৃপক্ষ হস্তগত করেছেন। তিনি আরো জানান, বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান নিজ স্বার্থ উদ্ধারে কলেজ সংক্রান্ত নানান মিথ্যা ও ভিত্তিহীন খবর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ