ঢাকা ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:১৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২১, ২০১৯
ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক
ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। হঠাৎ করে গত ১৫ দিনে দুই শতাধিকের অধিক অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে আটক করেছে বিজিবি। মহেশপুরের জলুলী, পলিয়ানপুর, খোসালপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা অনুপ্রবেশ করছে। ভারতের এনআরসি আতঙ্ক ও স্থানীয় নির্যাতনে তারা দেশ ছেড়ে চলে আসছেন বলে জানিয়েছেন বিজিবি। গত ১৫ দিনে ৭৫ নারী, ৬৪ পুরুষ ও ৬৪ জন শিশুকে তারা আটক করেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আটক করেছেন চারজনকে। তাদের আটকের পর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৫৮ বিজিবি বলছে, যারা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এদের মধ্যে বেশির ভাগই মুসলমান। এরা এনআরসি আতঙ্ক ও স্থানীয় নির্যাতনে দেশ ছেড়ে চলে আসছেন। তারা আর ভারতে যাবেন না বলে বিজিবির কাছে জানিয়েছেন। সহায়-সম্বল নিয়ে তারা এদেশে চলে এসেছেন।
মহেশপুর বিজিবি ৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল আহসান বলেন, মাইগ্রেশন করে যারা ভারতে গিয়েছিলেন তাদের সেখানে বসবাসে অসুবিধা হচ্ছে। নানাভাবে তারা চাপের মধ্যে পড়েছেন। বিশেষ করে ব্যাঙ্গালুর এলাকায় এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। যে কারণে তারা ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তারা এক সময় বাংলাদেশে ছিলেন বলে তিনি দাবি করছেন। তারা বেশিরভাগ দুর্গম এলাকার ঠিকানা দিচ্ছেন। যে কারণে বিজিবি যাচাই করতে পারছে না। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। আপাতত আটকদের অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মহেশপুর সীমান্তের বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, বিজিবি যে কয়েকজনকে আটক করেছে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। তারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে এদেশে প্রবেশ করেছে। অবশ্য বিজিবি কর্মকর্তা কামরুল আহসানের দাবি, তারা কঠোর নজরদারি করছেন। সে ক্ষেত্রে চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই।
ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) রাশেদুল আলম জানান, আটককৃতরা দুই দশকের অধিক সময় ভারতে কাজ করছিল। তাদের পরিচয় নিয়ে দেখা যাচ্ছে তারা বেশির ভাগ বাগেরহাট ও খুলনা এলাকার। ভারতের স্থানীয় ঝামেলায় তারা চলে আসছেন। তাদের বাংলাদেশে আত্মীয়-স্বজন রয়েছে।
এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারি কমিশনার (ভুমি) সুজন সরকারের কাছে একাধিকবার মোবাইল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের ঘটনা স্বীকার করে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, কারাগারে পাঠানোর পর তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। গত শনিবার থেকে বেশ কিছু নারী পুরুষ মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় আটক হয়েছে।
আটককৃত উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, তারা পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে ছিল। সেখানের কোনো বাসা বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে তারা কাজ করতো। সম্প্রতি ওখানে তাদেরকে কিছু লোকজন খোঁজ করছে এবং যারা তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছিল তারা তাদেরকে বলেছে তাদের আর রাখতে পারবে না। তখন বাধ্য হয়ে তারা ভারতের স্থানীয় দালাল ধরে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর বিজিবির হাতে আটক হচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, আমি তাদের বক্তব্য যাচাই করেছি, তারা বাংলাদেশের নাগরিক। তারা পাসপোর্ট ছাড়াই ভারতে গিয়েছিল। আবার অবৈধভাবেই দেশে ফিরছে।
Design and developed by zahidit.com