ঢাকা ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:২২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০১৯
মহেশপুর প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের মহেশপুরে মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত নাজিম উদ্দিন পায়নি আজও শহীদের মর্যাদা। সন্তানরা অতি মানবেতর জীবন যাপন করছে। পরিবার ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, মহেশপুর ক্যাম্প পাড়ার পরেশ মন্ডলের ছেলে নাজিম উদ্দিন ছিলেন মোজাহিদ বাহিনীর প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত একজন সদস্য। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। চৌগাছা উপজেলায় পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে মহেশপুর ফিরে আসেন। এ সময় তার শিশু পুত্র ওয়াজেদ আলীর বয়স ছিল ৭ মাস। স্ত্রী রুপভান বেগম শিশু পুত্রকে নিয়ে পিতার বাড়ী যোগিহুদা গ্রামে অবস্থান করছিল। সংবাদ পেয়ে অসুস্থ পুত্রের জন্য ঔষধ নিয়ে শ্বশুর বাড়ীতে যায় নাজিম উদ্দিন। বিষয়টি স্থানীয় রাজাকাররা দেখে ফেলে। ঐ রাতে মহেশপুর হাসপাতালে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প থেকে রাজাকার ও পাকিস্থানী বাহিনীরা যোগিহুদা গ্রাম থেকে নাজিম উদ্দিন ও তার শ্বশুর হাশমত আলীকে অস্ত্র সহ আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে। ক্যাম্পে তাদেরকে অমানুষিক নির্যাতন করে আটকে রেখে ৩দিন পর হাশমত আলীকে এবং ১ সপ্তাহ পর নাজিম উদ্দিনকে হত্যা করে মহেশপুরের বোদ্ধভূমিতে ফেলে রাখে। স্থানীয়রা জানায়, নাজিম উদ্দিনকে বেনেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে জীব গাড়ির পিছনে বেধে টেনে-হেছড়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে। দীর্ঘ ৪৭ বছর পার হলেও নাজিম উদ্দিন পায়নি শহীদের মর্যাদা, সন্তানরা পায়নি শহীদ পরিবারের মর্যাদা। বড় ছেলে সাবেক কমিশনার তোতা মিয়া শহীদ পরিবারের মর্যাদা পাওয়ার আশায় বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিলেও আজ পর্যন্ত কোন ফল হয়নি। ছেলেরা সহায় সম্বল হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। নাজিম উদ্দিনের পরিবারকে বাংলাদেশের স্বাধীন ভূ-খন্ডের কোন মানুষ তাদের খোজ রাখে না। ২৬ মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর আসলে বোদ্ধ ভূমিতে যেয়ে চোখের জল ফেলেন তারা।
Design and developed by zahidit.com