ঢাকা ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০১৯
মহেশপুর প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের মহেশপুরে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও পাক হানাদার বাহিনীর গণহত্যার সেই স্মৃতি স্তম্ভ আজও নির্মাণ হয়নি।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ১৫ই এপ্রিল যশোর ক্যান্টেনমেন্ট থেকে পাক হানাদার বাহিনী মহেশপুরের বিভিন্ন স্থানে ঘাটি স্থাপন করে। এর মধ্যে একটি শক্ত ঘাটি ছিল মহেশপুর হাসপাতালে। এর পূর্বে ভালাইপুর গ্রাম, উত্তরে কপোতাক্ষ নদ, পশ্চিমে মহেশপুর শহর। এই ঘাটিতে প্রায় দেড়শ পাঞ্জাবী খান সেনা ছিল। তারা ঘাটি স্থাপনের পর তাদের অবস্থান সুসংহত করেই আরম্ভ করে লুটতরাজ এবং গণহত্যা। তারা প্রথমেই স্থানীয় রাজাকারদের দিয়ে হিন্দু ও আ.লীগ কর্মীদের বাড়ী অনুসন্ধান করে লুটপাট চালায়। এ সময় অনেকেই বাড়ীঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। পাক সেনারা রাজাকারদের সহযোগিতায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজনকে ধরে এনে হাসপাতালের একটি কক্ষে চোখ বেঁধে আটকে রাখত। পরে কপোতাক্ষের পাড়ে গর্ত করে গুলি করে কখনো গ্রেনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আধা মরা করে গর্তের মধ্যে ফেলে দিত। একটি গর্তে ১০/১২জনকে মাটি চাপা দিত। এই ধরণের ৫০/৬০টি গর্তে প্রায় ৩/৪শ লোক কে হত্যা করা হয়। আরো জানা গেছে, হাসপাতালের একটি কক্ষে মেয়েদেরকে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন করা হতো এবং পাক সেনারা ইচ্ছা মত তাদেরকে ধর্ষণ করে হত্যা করে ঐ গর্তে ফেলে দিত। ঐ নির্মম নির্যাতনের ইতিহাস আজও স্মৃতির পাতায় বহন করছে মহেশপুরের মানুষ। এই ভূমিটির স্মৃতি চিহৃ স্থাপনের জন্য অনেকবার বিজয় দিবসের সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে দাবী উপস্থাপিত হলেও আজ পর্যন্ত তা করা হয়নি। ইতিপূর্বে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে ঐ সকল শহীদদের স্মরণ করে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঐ বৌদ্ধ ভূমিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও মোমবাতি প্রজ্বলন করেছে। মহেশপুর সাবেক পৌর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার কাজী আব্দুস সাত্তার জানায়, বধ্যভূমির স্মৃতি স্তম্ভ করার জন্য তারা দাবী করে আসছে কিন্তু এই জমিটি এখন প্রায়াত ঝিনাইদহ ৩ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম মাষ্টারের ব্যক্তি মালিকানা হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোনকিছু করা সম্ভব হয়নি। তিনি সরকারের কাছে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানিয়েছেন।
Design and developed by zahidit.com