ঢাকা ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:২৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৪
ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক: পলাতক হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। বন্ধ রয়েছে প্রয়োজনীয় যাবতীয় কেনাকাটা। স্টকও শেষ। এরই মধ্যে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে ল্যাবরেটরির অ্যানালাইজার মেশিন,লেন্সমিটার। ফলে রোগীদের সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে হাসপাতালটি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে,প্রেসক্রিপশন লেখার জন্য যে কলম ও কাগজ প্রয়োজন,সেটাও নেই হাসপাতালে। এমন করুণ দশা ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতালে।
নানাবিধ সমস্যার কারণে প্রায় তিন মাস চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে হাসপাতালটিতে। এতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা পড়ছে চরম ভোগান্তীতে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সংকট থাকায় বন্ধ রয়েছে অপারেশন কার্যত্রমও। দ্রæত সংকট কাটিয়ে চিকিৎসা সেবা চালুর দাবী রোগী ও স্বজনদের।
হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছে,গত ৫ আগস্টের পর থেকে হাসপাতালটির পরিচালনা কমিটির সদস্যরা গা ঢাকা বা অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের যাবতীয় কেনাকাটা। একারণে সব ধরণের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে অন্ধ কল্যাণ সমিতির পরিচালনায় পরিচালিত দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র বৃহত ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পূণর্বাসন কেন্দ্রটি। তিনমাস আগেও হাসপাতালটিতে প্রতিদিনই আউটডোরে আড়াই’শ থেকে তিন’শ রোগীকে সেবা প্রদান ও অন্তত চল্লিশ জনকে অপারেশন করা হলেও নানা সংকটে এখন তা নেমে এসেছে শূণ্যের কোটায়। এখনও হাসপাতালটিতে প্রতিদিনই ভীড় করছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা। কিন্তু সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে ঝিনাইদহ সহ পাশ^বর্তী জেলা থেকে সেবা নিতে আসা শত শত রোগী ও স্বজনদের। তবে এতসব সংকটেও এখনও নেয়া হয়নি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
এদিকে হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন,অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য সহ নানাবীধ দূর্নীতির কারণেই হাসপাতালটির এই দশা। সকল সংকট কাটিয়ে চিকিৎসার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানোর পরও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। নানা সংকট থাকার কারণে হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক,কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও রোগীদের সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুল হাকিম বলেন,‘একমাস মাস আগে মাংস কাটার সময় হাড়ের টুকরা ছিটকে গিয়ে ডান চোখে আঘাত লাগে। পরিবারের লোকজন তাঁকে দ্রæত হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। চোখের অস্ত্রোপচার করাতে হবে বলে পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকায় তা করাতে পারছেন না। একমাস ধরে চোখের ব্যথা সহ্য করছেন।’
শৈলকুপার দুধসর থেকে আসা আমেনা খাতুন বলেন,‘চোখের অসহ্য ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম,এসে টিকিটও পায়নি। পরে শুনি,হাসপাতালে নানা সংকটের কারণে চিকিৎসা দিতে পারছেন না ডাক্তাররা। এখন বাইরে থেকে ভাল ডাক্তার দেখাতে হলে অনেক টাকা প্রয়োজন।
হাসপাতালটির চিকিৎসক আরাফাত রহমান বলেন,‘হাসপাতাল চালু থাকলেও বেশকিছু সরঞ্জাম ও ঔষধ সংকট থাকার কারণে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যায় আছি। অন্যদিকে গত ৫ আগস্টের পর থেকে হাসপাতালটির পরিচালনা কমিটির সদস্যরা গা ঢাকা বা অনুপস্থিত থাকার কারণে প্রয়োজনীয় যাবতীয় কেনাকাটা করতে পারছি না। কমিটি হলেই আবার পুরোদমে চালু হবে হাসপাতালটি।’
ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধ পূণর্বাসন কেন্দ্রের পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে থাকা ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন,‘দু-একদিনের মধ্যেই সকল সংকট কাটিয়ে হাসপাতালের সকল চিকিৎসা কার্যত্রম চালু করা হবে।
Design and developed by zahidit.com