ঢাকা ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা শাবান, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২১
ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক:
অনৈতিক কাজের অভিযোগে বাড়িতে আগুন দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক নারী ও পূরুষকে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মাথার চুল, ভ্রু ও গলায় জুতার মালা পড়িয়ে রাতের আধারে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি বুধবার রাতে ঝিনাইদহের শৈলকুপার আবাইপুর গ্রামে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ ঘটনাটি ঐ রাতে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে জানালে পুলিশ তাদেরকে ক্যাম্পে সোপর্দ করতে বললেও সমাজপতিরা অভিভাবকের কাছে দেওয়ার কথা বলে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয় বলে জানা যায়। তবে সমাজপতিদের একজন জানান তাদের অভিভাবক না আসায় তারা স্ব-ইচ্ছায় গ্রাম ত্যাগ করেছে।
নাসিমের প্রতিবেশী বিশারত বিশ^াসের স্ত্রী কোহিনুর বেগম জানান, প্রায়ই সাগর নদী পার হয়ে নাসিমের বাড়িতে অবস্থান করে। গত বুধবার রাতেও এক ঘটনা ঘটলে রাত ১০টার দিকে তিনি সাগর ও নাসিমের স্ত্রীকে ঘরে আটকিয়ে গ্রামবাাসিদের খবর দেন। পরে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিশারত বিশ^াসের বাড়িতে সালিশের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয় সাগর ও নাসিমের স্ত্রীর অনৈতিক কাজের অভিযোগে তাদের মাথার চুল ও ভ্রু কাঁটবে ইয়াসমিনের স্বামী নিজেই। যদি না কাঁটে তাহলে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এ সিদ্ধান্ত নাসিমকে জানানো হলে পরে সে এসে তার স্ত্রী ও পরকিয়ার অভিযোগে আটক সাগরের মাথার চুল ও ভ্রু কেঁটে দেয়। এরপর তাদের গলায় জুতার মালা পড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ তাদের সোপর্দ করতে বললে পরে সিদ্ধান্ত হয় পুলিশে না দিয়ে তাদের অভিভাবকদের কাছে দেওয়া হবে। কিন্ত রাত ২টা পর্যন্ত কোন অভিভাবক না আসলে পরে দুজনে রাতেই এলাকা ত্যাগ করে বলে তিনি জানান। তবে তারা এখন কোথায় আছে কোন পরিবারই তা জানেন না।
শুক্রবার সকালে আবাইপুর ওয়াবদার পাশে নাসিমের বাড়িতে নাসিমকে না পাওয়া গেলেও তার মা সালেহা খাতুন জানান, গ্রাম্য সালিশে সিদ্ধান্ত হয় নাসিম তার স্ত্রীর মাথার চুল কেঁটে তাড়িয়ে না দিলে তার বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এ ভয়ে তার ছেলে তার স্ত্রীকে মাথার চুল, ভ্রু ও গলায় জুতার মালা পড়িয়ে তাড়িয়ে দেয়। এখন সে কোথায় আছে তা তারা জানেন না। তার ঘরে ছোট একটি মেয়ে রয়েছে।
আবাইপুর গ্রামের মাতব্বর রবিউল ইসলাম বলেন গত বৃহস্পতিবার রাতে নাসিমের প্রতিবেশী কোহিনুর বেগম আপত্তিকর অবস্থায় বগুড়া গ্রামের চা দোকানদার সাগর ও নাসিমের স্ত্রীকে একই ঘরে আটকিয়ে রাখে। পরে তাদের খবর দিলে সালিশে সিদ্ধান্ত হয় অনৈতিক কাজের অপরাধে নিজের স্ত্রীর চুল ও ভ্রু তাকে কাঁটতে হবে এবং দুজনকে গলায় জুতার মালা দিয়ে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। ঐ রাতেই তারা গ্রাম ছাড়ে।
হাটফাজিলপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই ফারুক হোসেন জানান বুধবার রাতে আবাইপুর গ্রাম থেকে তাকে জানানো হয়েছিল অনৈতিক কাজের অভিযোগে দুইজনকে একই ঘরে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি তাদের ক্যাম্পে সোপর্দ করতে বললে তারা তাকে জানান উভয়ের অভিভাবকদের কাছে দেওয়া হবে। পরে বৃহস্পতিবার ঐ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তারা দেখেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ তাদের কাছে আসেনি। আসলে ব্যবস্থা নেবেন।
Design and developed by zahidit.com