ঢাকা ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:১০ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২০
বিশেষ প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ॥
বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি থেকে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে এক নিষ্ঠুর সন্তান। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ পরের জমিতে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। খাওয়া-নাওয়া ও চলছে প্রতিবেশির বাড়িতে। এভাবে এক সপ্তাহ হলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওই হতভাগা বাবা। অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ৫নং শিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নের বড়শিমলা গ্রামে। বৃদ্ধের নাম আবজাল গাজী। পাঁচ বছর আগে তার ছেলেরা তার স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তি লিখে নেয়। বাড়ি ছাড়ার এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃদ্ধ আবজাল গাজী অন্যের সহযোগীতায় কালীগঞ্জ থানায় ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বৃদ্ধের স্ত্রীও বাড়ি ছেড়ে একমাত্র মেয়ে জামাই বাড়ি বসবাস করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সত্তোর্ধ বৃদ্ধ আবজাল গাজীর তিন ছেলে এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকায় বেশ কয়েক বছর আগে। তিন ছেলে বিদেশ করেছেন। এরমধ্যে মেজ ছেলে রবিউল ইসলাম গাজী মারা গেছেন। ছোট ছেলে বাবুল গাজী এখনো প্রবাসি। বড় ছেলে রফিক গাজী প্রায় আট বছর হলো প্রবাস থেকে ফিরে এখন বাড়িতে।
বৃদ্ধ বাবা আবজাল গাজীর দাবি, ছেলে আমাকে খেতে দেয় না, কিছু বললেই শুধু মারে। প্রায় আমাকে ধরে ধরে মারে। এক সপ্তাহ আগেও আমার বড় ছেলে রফিক আমার বাম চোয়ালে জোরে চড় মারে। এরপর বাধ্য হয়ে প্রতিবেশিদের পরামর্শে বাড়ি ছেড়ে গ্রামে সম্পর্কে এক বোনের জমিতে একটি চালা তৈরি করে সেখানেই থাকছি। খাওয়া নাওয়া পরে বাড়িতে বলছিলেন এই বৃদ্ধ।
যদিও অভিযুক্ত ছেলে রফিক গাজীর বক্তব্য ভিন্ন। রফিক গাজীর ভাষ্য, আমার বাবা আমার কথা শোনে না। সে তার মত করে চলতে চাই। যে কারনে মতের অমিল হওয়ায় সম্প্রতি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। তবে জমি লিখে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন সব জমি অন্যের কাছ থেকে কেনা।
প্রতিবেশি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হযরত আলীর চোখে রফিক গাজী একজন চরম অভদ্র এবং অসামাজিক মানুষ। স্থানীয় এ নেতার ভাষ্য, বৃদ্ধ আবজাল গাজীকে প্রায়ই তার বড় ছেলে রফিক গাজী নির্যাতন করে। দিনের পর দিন খেতে দেয় না। এ নিয়ে সামাজিকভাবে অনেক বারই শালিশ হয়েছে কিন্তু কোন সমাধান হয়নি। সর্বশেষ বৃদ্ধ প্রতিবেশি এক বোনের জমিতে চালা তুলে বসবাস করছেন। এ ঘটনায় তার সহযোগীতায় বৃদ্ধ আবজাল কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলেও যোগ করেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রাণী সাহা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
Design and developed by zahidit.com