ঝিনাইদহে শ্রেণী কক্ষ সংকটে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ৩:১৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০১৮

ঝিনাইদহ সংবাদ ডেস্ক :

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নরহরিদ্রা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাটাইয়ে ঘেরা শ্রেণী-কক্ষের ভিতর থেকে এভাবেই তাকিয়ে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। কেননা বিদ্যালয়ে নেই পাকা ভবন, আছে চাটায়ের ভবন যার নিচে চাটাই উপরে টিন।

ঝিনাইদহে শ্রেণীকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন লোখাপড়ায় মনোযোগী হচ্ছে না তেমনি শিক্ষকরাও ঠিকমত পাঠদান করতে পারছেন না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার মুল উদ্দেশ্য। সদ্য জাতীয়করনকৃত বিদ্যালয়ে সমস্যা বেশী প্রকট।

জেলা সদরের লৌহজংগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। কক্ষ সংকটে একসাথে চলছে দুটি শ্রেণীর পাঠদান। শিক্ষকরা তাদের পাঠদানে ব্যস্ত থাকলেও উভয় শিক্ষকের কথা শোনা যাচ্ছে এক সাথে। ফলে লেখা-ড়ায় মনোযোগী হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।

এমনচিত্র নরহরিদ্রা, শহীদ মোশাররফ হোসেন সহ সদ্য জাতীয়করণকৃত ৮০ ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশরই নেই প্রয়োজনীয় ভবণ। কোন কোন বিদ্যালয়ের শ্রেণী-কক্ষের চারিপাশে ঘেরা টিন-চাটাই দিয়ে, তাও ভাঙাচুরা। রোদ-বৃষ্টিতে পানি পড়ে।

কিছু কিছু বিদ্যালয়ে পাকা ভবন থাকলেও রয়েছে শিক্ষার্থীর তুলনায় পর্যাপ্ত শেণীকক্ষ সংকট। অনেক বিদ্যালয়ের পুরতান ভবন আবার ঘোষণা করা হয়ে পরিত্যাক্ত। ফলে সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে এসব বিদ্যালয়ে।

তবে পূর্বের জাতীয়করণকৃত ৩০ ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে এমন সমস্যা। আর সদ্য জাতীয়করণকৃত ৮০ ভাগ বিদ্যালয়েরই রয়েছে এমন সমস্যা। এমন পরিস্থিতিতে শঙ্কিত অভিভাবক সহ নানা মহলের মানুষ।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের পড়া শুনা করতে খুব কষ্ট হয়। ঠিকমত স্যারের কথা শোণা যায়না। আবার বৃষ্টি হরে বই খাতা ভিজে যায়। এই সমস্যার সমাধান হলে আমাদের খুব ভাল হত।


সদর উপজেলার লৌহজঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তারা রানী কুন্ডু বলেন, শ্রেণী-কক্ষ সংকটের কারনে দুই শিপ্টে ক্লাস নেওয়া হয়। তাও একই কক্ষে দুই শ্রেণীর পাঠদান চলে। ফলে ফলে ছাত্রছাত্রীদের পাঠে মনোযোগী হতে কিছুটা তো সমস্যা থাকেই। আবার অনেক সময় শিক্ষকদের বসার জায়গাও থাকে না। যখন ক্লাস বন্ধ থাকে তখন সেখানে শিক্ষকরা একটু রেস্ট নেয়।

অভিভাকরা বলেন, এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার। কেননা এতে আমাদের সন্তানরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, ভাল করে লেখা-পড়া করতে পারছে না।


এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মো: আক্তারুজ্জামান জানান, সবগুলো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরিপ কার্য চলছে। জরিপ শেস হলে বোঝা যাবে কোন কোন বিদ্যালয়ে শ্রেণী-ক্ষক সংকট রয়েছে। পরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা সমাধানে উদ্দোগ নেওয়া হবে।

জেলায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৮৯৭ টি। এর মধ্যে ২০১৩ সালের পর কয়েকটি ধাপে জাতীয়করণ করা হয় ৪৮৯ টি বিদ্যালয়। জেলায় এখনও বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩৯ টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৫ হাজার ২ শত ৭৭ জন। আর অস্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চলছে ৩৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

।(প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভাল, মন্দ- শেষ পর্ব)।