সাংবাদিক একে আজাদের উপর হামলার ঘটনায় ফের মামলার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ৪:৪১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৮, ২০২৪

সাংবাদিক একে আজাদের উপর হামলার ঘটনায় ফের মামলার প্রস্তুতি

ডেস্ক নিউজ: ২০১৮ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর। পেশাগত দায়িত্ব পালন করে সন্ধায় বাড়ি ফিরছিলেন রাজবাড়ির পাংশার সাংবাদিক এ,কে আজাদ। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাংশা পোস্ট অফিসের সামনে থেকে  ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল যোগে এসে তাকে ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে তার উপরে অতর্কিত আক্রমণ করে। তাদের হাতে ছিল পিস্তল, লোহার রড,হাতুড় সহ দেশীয় অস্ত্র। তা দিয়ে সাংবাদিক আজাদকে দিয়ে পিটিয়ে মারাত্বকভাবে জখম করে ফেলে রেখে যায়। এ সময় তার শরীরে রক্তক্ষরণ ঘটলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন । স্থানীয় জনতা তাকে নিকটস্থ লিজা হেলথকেয়ার মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ তাকে চিকিৎসা দেওয়ার পরিবর্তে আধাঘন্টা মূল্যবান সময় নষ্ট করান। যার ইন্ধন দেন আব্দুল আল মাসুদ বিশ্বাস।  পরে তাকে পাংশা সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে  তাৎক্ষণিকভাবে জরুরী চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ৩:৩০টার দিকে পঙ্গুতে পৌঁছালে সকাল ৬টায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তার বাম পা বাদ দেবার কথা বলেন। কিন্তু তিনি পা বাদ দিয়ে অপারেশন করতে অস্বীকৃতি জানান। এই অবস্থায় তাকে ১১৭ দিন সেখানে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে রাজবাড়ী কোটে মামলা করা হলে ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পাংশা মডেল থানা । কিন্তু কোর্ট এই মামলায় আসামীদের জামিন মঞ্জুর করেন পাংশার সাবেক এমপি ও রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলে ‍মিতুল হাকিমের ইশারায়। পরবর্তীতে আসামীদের চাপে পড়ে বাদী একে আজাদ  মামলা তুলে নিতে বাধ্য হন। জীবন বাঁচাতে সাংবাদিক একে আজাদ জমি বিক্রি করে চিকিৎসা করান। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।

পাংশার সাবেক এমপি ও রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলে মিতুল হাকিমের ইশারায় হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতৃত্বে ছিল শহীদুল ইসলাম মারুফ সরদার যুবলীগের ক্যাডাররা, মিজানুর রহমান মজনু (তৎকালীন এম. পির বাড়ির কেয়ারটেকার) সহ তাদেরই দলীয় লোকজন।

সাংবাদিক একে আজাদ তৎকালীন বাঙালি খবর পত্রিকায়- টোকাই সাম্রাজ্যে দিশেহারা মানুষ এবং দেড় কোটি টাকা লোপাট শিরোনামে দুইটি প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশ করেন। এরপর থেকে রাজবাড়ির কালুখালি উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনু,যুবলীগ, ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডাররা, শহিদুল ইসলাম মারুফ সহ বেশকয়েকজন নানাভাবে হুমকি ও নাজেহাল করে। পরে সুযোগ বুঝে একে আজাদের উপর হামলা করে তারা।

একে আজাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন,পাংশার সাবেক এমপি ও রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ও তার ছেলে মিতুল হাকিমের হুকুমে  আমাকে যুবলীগ নেতা ফজলুল হক ফরহাদ, যুবলীগ নেতা জালাল উদ্দিন বিশ্বাস,দীপক কুন্ডু, খন্দকার রিপন সহ আরো ও অনেকেই মামলা তুলে নিতে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে। আমি মামলা না তুললে আমার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে আমার পরিবার পরিজন বাড়িতে থাকতে পারবে না এমন অনেক ভয়ভীতি দেখায়। ভয়ভীতির কারণে আমি মামলা তুলতে বাধ্য হই।  আবার আগামী সপ্তাহে আমি আবার মামলাটি চালু করব।

প্রসঙ্গত,হামলার সময় সাংবাদিক একে আজাদ দৈনিক আজকালের খবরের রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি এবং বাঙালি খবর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকার রাজবাড়ি প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।