ঢাকা ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২০
ড. খান মোঃ মনিরুজ্জামান
সক্রেটিসের মৃত্যুদন্ড কালি সাঝে,
বড় ব্যাথা তাঁর ভক্তবৃন্দের মাঝে।
পরিবারের সবাই বেদনা বিহবল,
শেষ বিদায়ে জেলারের অশ্রুজল।
যে মরবে সেযে স্থির, শান্ত অবিচল,
যে মারবে কেবল তাঁর চোখে জল।
জ্ঞানী দার্শনিকের কি অদ্ভুত শাস্তি!
এ নিছক দুষ্ট জ্ঞান পাপীদের মাস্তি।
তাঁর তরে জেলারের ভক্তি বাক্যবান,
“এথেন্সের হে গৌরব দীপ্ত সুসন্তান,
আমি যে নই তব অভিশাপের পাত্র,
দায়িত্ব পালন করেছি শুধু এ মাত্র।
আপনার মত সৎ, সাহসী ও জ্ঞানী,
আমি কাউকে এভাবে যে নাজানি’।
মরণের পুর্বে সক্রেটিস যা যা কল্লেন,
মহিলা ও শিশুদের চলে যেতে বল্লেন।
শিষ্যরা কাঁদিছে সবে প্রিয়গুরুর তরে,
মরণকে পরোয়া করবে সে কি করে।
মৃত্যুতে কি কিছুই যায়-আসেনা তার?
তাঁকে মারবে এমন সাধ্য আছে কার?
সক্রেটিসরা তো বিশ্ব ভবে চিরঅমর,
মরে বেঁচে থাকার মত সাধ্য গুণধর।
অভিযোগ, ‘দেবতাদের প্রতি ভিন্নমত,
রাষ্ট্রাচারের বিরোধপুর্ণ তাঁর নসিয়ত।
তরুণ্যের বিপথের উৎসাহ উদ্দীপনা’,
মৃত্যুদন্ড এড়াতে সে কোনকিছু কয়না।
বিচারক সব গ্রীসপতির অতি অনুগত,
আজ তাদের বাগে শিকার কায়দামত।
তাঁর জনপ্রিয়তায় ছিল সবার জ্বলন,
তাদের সইতে নারি বাঁকা তাঁর চলন।
তবুও হয়তো বেঁচে যেতেন সক্রেটিস,
কাঠগড়ায় বিচারক তাচ্ছিলের হদিস।
ফলাফল সহজ একেবার গুরুচরণ,
হ্যামলক বিষপানে তাঁর নিষ্ঠুর মরণ।
মৃত্যুর পুর্বে একমাস কারাগারে বন্দী,
তাঁর জ্ঞানে মুগ্ধ জেলাররা করে সন্ধি।
সক্রেটিসকে পলাতে বললেন তারা,
বল্লেন, ‘পালিয়ে বাঁচে কাপুরুষ যারা’।
পৌরুষসহ মৃত্যু অপমান থেকে ভালো,
তাঁর মৃত্যুই জ্ঞানের আলো জ্বালালো।
জল্লাদ এলেন হ্যামলকের বিষ নিয়ে,
জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে তো তিন বিধাতা নিয়ে।
এ বিষের পুরোটাই করলেন তিনি পান,
শিষ্যদের কাঁদনে ভার জমিন আসমান।
হাঁটতে বললেন জল্লাদ তাঁরে কিছুক্ষণ,
যাতে বিষের প্রভাব ফুটে উঠে বিলক্ষণ।
হায় হায় করে কাঁদলেন ভক্তবৃন্দ সবে,
কেবলমাত্র সক্রেটিসের অশ্রুজল নাই।
সারা জীবন আইনে শ্রদ্ধা যাঁর স্বভাব,
মৃত্যুকালে আইন মানার হবেনা অভাব।
দূর্বল পায়ে দাঁড়িয়ে হাঁটলেন কিছুক্ষণ,
এরপর বিছানায় পড়ে মরার বিলক্ষণ।
শিষ্যদের বল্লেন “জোরে কেঁদোনা আর,
বিলকুল শান্তিতে মরণ হউক আমার।
জল্লাদের পাষাণ হৃদয়ে শ্রদ্ধার ভাব,
লজ্জায় প্রকাশে তার বিনম্র স্বভাব।
চাদরে মুখ ঢাকলেন জ্ঞানী সক্রেটিস,
মরণ জ্বালায় বিষ গুণে উঠেছে বিষ।
চাদরটা সরালেন মুখ হতে শেষবার,
একজন শিষ্যকে শেষকথা ছিল তাঁর।
প্রতিবেশীর কাছ হতে তাঁর মুরগী ধার,
মুরগীটি ফেরত দিতে বললেন স্যার।
এটা ছিলো তার জীবনের শেষ কথা,
বিশ্বে তাঁর কতনা জ্ঞানকথা যথা যথা।
ক্ষণকালে পরপারে গেলেন মহাজ্ঞানী,
প্লেটেকে তাঁর সেরা শিষ্য বলে জানি।
আড়াই হাজার বছর পুর্বের এ ঘটনা,
পুস্তকে প্লেটোর এ বিরল উপস্থাপনা।
প্লেটোর শিষ্য গুণী এ্যারিষ্টটল সজ্জন,
কালসেরা জ্ঞানী মানুষের সে একজন।
মহাবীর আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট নাম,
তাঁর প্রিয় শিক্ষক এ্যারিষ্টটল সুমহান।
প্রহসনের বিচারে তাঁর মৃত্যু হলো ঠিক,
আজও বিচারকবৃন্দের ধিক্কার অধিক।
অথচ মরণ তাঁকে মারতে পারেনি ভাই,
জ্ঞান জগতে আমরা তাঁকে খুঁজে পাই।
সত্য প্রতিষ্ঠায় যাঁরাই লড়বে অবিরত,
সক্রেটিস তাঁদের অনুপ্রেরণা চিরায়ত।
একাত্তর বছর বয়সে মরল সক্রেটিস,
স্মরনীয় তাঁর জ্ঞানের জ্যোতি অহর্নিশ।
রচনাকালঃ ২১/১০/২০২০ খ্রি.
সময়কালঃ ৭.০০ এএম। বারাসিয়া, মাগুরা।
সম্পাদক – মাহমুদ হাসান টিপু
নির্বাহী সম্পাদক – পিন্টু লাল দত্ত
বার্তা সম্পাদক – সোহাগ আলী
www.jhenaidahsongbad.com
jhenaidahsongbad@gmail.com
প্রকাশক- জাহিদুল ইসলাম বাবু মিয়া
ব্যবস্থাপনা পরিচালক – মোঃ মজিবুর রহমান সরকার
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়ক,ঝিনাইদহ
০১৭১১২৬০৩৯৩ / ০১৭১১৪৫২০৫১
Design and developed by zahidit.com